প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০১ পিএম
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:১৫ পিএম
ফাইল ফটো
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। যা গত অর্থবছরে ছিল ৯ শতাংশ। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে সাড়ে ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও দিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানিবহির্ভূত পণ্যের দাম কিছুটা হ্রাস, প্রত্যাশিত উচ্চতর কৃষি উৎপাদন ও নতুন কাঠামোর অধীনে মুদ্রানীতির কঠোরতার কারণে মূল্যস্ফীতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত সেপ্টেম্বরের তথ্যে দেখা গেছে, গত আগস্টে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। একই মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে পৌঁছেছে। এর আগে জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ওই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে দেশে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। জুলাইয়ে তা ছিল ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
এদিকে প্রবৃদ্ধির তথ্যে এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে আনুমানিক ৬ দশমিক শূন্য শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় চলতি অর্থবছরের এ অর্জন বেশি। ইউরোপে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং ভালো রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি অ্যাকাউন্টের ঘাটতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ থেকে সামান্য কমে শূন্য ৫ শতাংশ হতে পারে বলে সংস্থাটি মনে করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে বেশ কয়েকটি বড় সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প শেষ হয়েছে। এগুলো বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে দেশের মুদ্রানীতি কাঠামোর উন্নতির পর প্রাথমিক উচ্চ সুদের হারের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ কমতে পারে।
এ ব্যাপারে এডিবির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেছেন, ‘সরকার বাহ্যিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে তুলনামূলক ভালোভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিভিন্ন সংস্কারের অগ্রগতি করছে। এই মূল কাঠামোগত সংস্কারের মধ্যে রয়েছে জনসাধারণের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধি করা, সরবরাহ চেইন উন্নতি করা এবং আর্থিক খাতকে আরও গভীর করার কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ সম্প্রসারিত করতে এবং দেশের জলবায়ু পরিবর্তন লক্ষ্য অর্জনে আরও কাজ করতে হবে।’
এডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে এডিবির ৫০ বছরের অংশীদারত্ব চলছে। এডিবি বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবকাঠামো, জনসেবা ও সামাজিক উন্নয়নের উন্নতির জন্য সহঅর্থায়নের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন ঋণ ও অনুদান সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এডিবির সার্বভৌম পোর্টফোলিওতে প্রায় ১৩ বিলিয়ন মূল্যের ৫৩টি প্রকল্প রয়েছে।