প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:২২ পিএম
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই থেকে আগস্টে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের (এডিপি) অগ্রগতি মাত্র ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। মন্ত্রণালয়গুলো এ সময় ১০ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে। তবে এ দুই মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি ছয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এগুলো হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে আগস্টে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৫২ কোটি টাকা। মাস হিসেবে এ বাস্তবায়নের হার ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অবশ্য আগের বছরের একই সময়ে এ বাস্তবায়নের হার ছিল ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এ বছর ১ হাজার ৩৯২টি প্রকল্পের জন্য এডিপির বরাদ্দ ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা, বিদেশি অর্থায়ন ৯৪ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ২৪টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ১২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। তবে এ মন্ত্রণালয় কোনো টাকাই খরচ করেনি। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৯৬টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এ মন্ত্রণালয় এক টাকাও খরচ করতে পারেনি।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ১৭টি প্রকল্পের বিপরীতে এডিপি বরাদ্দ ২ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। খরচের ক্ষেত্রে একই অবস্থা এ বিভাগেরও। জনপ্রশাসনের ১৬টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ৯৭২ কোটি টাকা। তবে খরচ করা হয়েছে নামকাওয়াস্তে, শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১৬টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৭৪৮ কোটি টাকা, খরচের খাতা এখনও শূন্য।
গত অর্থবছর এক টাকাও খরচ করতে না পারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও খরচের খাতাই খুলতে পারেনি। শূন্যের তালিকায় এবারও রয়েছে তারা। আরেক মন্ত্রণালয় আইন ও বিচার বিভাগের ৫ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ১৬৩ কোটি টাকা। খাতা খুলতে পারেনি তারাও।
সদ্য শেষ হওয়া আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সে অবস্থা থেকে কিছুটা উন্নতি হচ্ছে চলতি অর্থবছর। গত অর্থবছরে সরকারের এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল ৮৪ দশমিক ১৬ শতাংশ; যা আগের অর্থবছরে ছিল ৯২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা আইএমইডির কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়ায় অনেক প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন এবং তহবিলের সীমিত ছাড়ও এডিপি বাস্তবায়ন হার কমিয়েছে।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় অগ্রাধিকার অনুসারে বিভিন্ন প্রকল্পকে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে সরকার। সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত প্রকল্পগুলোকে রাখা হয়েছে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। এসব প্রকল্পের জন্য অর্থছাড় সাময়িকভাবে বন্ধ আছে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া, ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত প্রকল্পগুলোর জন্য ৭৫ শতাংশ অর্থছাড়ের কথা বলা হয়েছে। আর ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোর জন্য নির্ধারিত তহবিলের ১০০ শতাংশই ছাড় করা যাবে।