এম আর মাসফি
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৩১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের প্রাচীন বৌদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে প্রচার করতে নেপালের লুম্বিনীতে প্যাগোডা ও বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এজন্য ৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করেছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বৈদেশিক মুদ্রায় বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ, বহুসংস্কৃতি এবং বহুত্ববাদী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাব সূত্রে জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল ২০১৯ সালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে। তারই আলোকে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। সমীক্ষায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহায়ক মর্মে সুপারিশ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ২৮ জুলাই বাংলাদেশ সরকারের অর্থে বৌদ্ধবিহার নির্মাণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়। এ ব্যাপারে নেপালের লুম্বিনী ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর।
নেপালের লুম্বিনীর ইতিহাস তুলে ধরে প্রস্তাবনায় বলা হয়, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য চারটি পবিত্র স্থানের মধ্যে নেপালের লুম্বিনী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। স্থানটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। গৌতম বুদ্ধ লুম্বিনীর বিখ্যাত উদ্যানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্থানটি লুম্বিনী উন্নয়ন ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত, যা প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ সংরক্ষণ আইন ১৯৫৬ দ্বারা সুরক্ষিত। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে একে স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সমন্বয়ে প্রকল্পটির নকশা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে দায়িত্ব দিয়েছে। নির্দেশ অনুসারে, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সংস্থা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ডেপুটি চিফ আর্কিটেক্ট, স্থাপত্য বিভাগের কাছ থেকে বাংলাদেশ প্যাগোডা এবং বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের একটি স্থাপত্য নকশা সংগ্রহ করে। এ ছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পিডব্লিউডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকেও উল্লিখিত নকশা অনুযায়ী প্যাগোডা ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের প্রাক্কলন সংগ্রহ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট নেপালের লুম্বিনী সংরক্ষণ অঞ্চলে বাংলাদেশ প্যাগোডা এবং বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত করে প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে।
প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের স্কাইসোয়াম উইংয়ের যুগ্ম প্রধান মো. আশরাফুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পিইসি সভায় আমরা প্রস্তাবিত এই রেটশিডিউল অনুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা যাবে কি না তা জানতে চেয়েছি এবং সঠিক ব্যয় নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালেই ধর্ম মন্ত্রণালয় ও গণপূর্তের একটা টিম গিয়ে ওই জায়গা দেখে এসেছে। জায়গাটি নেপালের, আমাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেটি হলে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের প্রাচীন বৌদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে প্রচার করা সম্ভব হবে এবং ধর্মনিরপেক্ষ, বহুসংস্কৃতি এবং বহুত্ববাদী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে।’