প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৪২ পিএম
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:০১ পিএম
ফাইল ফটো
চলতি বছর আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। গত দুই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর আগস্টে তা আবার বেড়েছে। পাশাপাশি আগস্ট মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অনেকটা বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ ছাড়া শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরকারের প্রত্যাশা ছিল আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমবে। ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভার (একনেক) পর পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতি জোর করে কমানো যায় না। কার্যকর নীতি নিতে হবে। আমি ঝুঁকি নিয়ে বলতে পারি, চলতি আগস্টে মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৪ পয়েন্ট কমবে।
পরিকল্পনামন্ত্রীর মূল্যস্ফীতি কমার আশা পূরণ হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বন্যা এবং বৃষ্টির কারণে আগস্টে পণ্য সংকট হওয়ায় খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া পণ্য আমদানিতেও কিছুটা সমস্যা রয়েছে যার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
আগস্টে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হওয়ার মানে হলো, ২০২২ সালে আগস্টে একজন মানুষ যে পণ্য ও সেবা ১০০ টাকায় কিনতেন, চলতি বছরের আগস্টে একই পণ্য কিনতে তার খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৯২ পয়সা। মূল্যস্ফীতি হলো এক ধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়।
এর আগের মাসে, অর্থাৎ জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং জুনে তা ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তবে গত মে মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এই হার গত প্রায় এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ০২ শতাংশ, যা বছরওয়ারি হিসাবে এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, আগস্টে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের মাস, অর্থাৎ জুলাইয়ে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর মানে, আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এর মধ্যে গ্রাম এলাকায় আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১১ শতাংশে। উভয় ক্ষেত্রে খাদ্য মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ১০ শতাংশের নিচে ছিল।
অন্যদিকে সার্বিক খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ হয়েছে। এর মধ্যে আগস্টে গ্রাম এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও শহর এলাকায় এটি ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এ ছাড়া গ্রামে এখন সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর শহরে এখন সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।