সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:০১ পিএম
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৫০ পিএম
পাটখড়িতে লাভবান চাষি। প্রবা ফটো
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও ধোয়ার পাশাপাশি হাট-বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে পাটের উৎপাদন খরচ অনুপাতে দাম না পাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে প্রতিবারের মতো এবারও পাটখড়ি বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করছেন তারা। এতে পাট চাষে লোকসানের ঘাটতি পুষিয়ে কিছুটা হলেও লাভবান হওয়ার কথা জনিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ফরিদপুরে ৮৮ হাজার ৩৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৬২৭ টন।
সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব শ্যামপুর গ্রামের পাটচাষি বিরাজ মোল্লা জানান, তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। এবার পাটের দাম অনেক কম বাজারে। তাই যে পাটখড়ি পেয়েছেন তা ভালোভাবে শুকিয়ে পরিষ্কার করে বিক্রি করতে পারলে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় হবে।
তিনি জানান, পাশের উপজেলা চরভদ্রাসনে বোর্ড ফ্যাক্টরি রয়েছে। পাটখড়ি সরাসরি সেখানে দিতে পারলে লাভবান হওয়া যেত। কিন্তু সেখানে দেওয়ার আগেই মানুষ রান্নার ও ঘরের বেড়া দেওয়ার কাজে ব্যবহারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি আঁটি পাটখড়ি পাঁচ টাকা থেকে ছয় টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ১০০ আঁটি পাটখড়ি ৪০০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে পাটের কম দাম পেলেও খড়ি বিক্রি করে বাড়তি অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ৯ ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমিতে তোষা, মেছতা ও কেনাফ জাতের পাটের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মেছতা জাতের পাট বেশি চাষ হয়েছে। এবার পানির সংকট থাকায় পাটের সোনালি রঙ খুব কম লক্ষ করা গেছে। তা ছাড়া উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হয়নি। তাই পাটখড়ি বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পাটের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। আগে পাটকাঠি শুধু জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হতো। এখন পাটকাঠি ঘর নির্মাণকাজে ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া এগুলো দিয়ে পার্টিক্যাল বোর্ড ও ছাই দিয়ে কম্পিউটারের প্রিন্টিং মেশিনের কালি বানানো হচ্ছে। এবার পাটের দাম কিছুটা কম থাকলেও পাটখড়ির দাম ভালো। জেলায় ১০০ আঁটি পাটকাঠি ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে কৃষকরা পাটখড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।