প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২২ ২০:৫৭ পিএম
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২২ ২১:১৩ পিএম
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি- এডিপিতে বরাদ্দকৃত অর্থের ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি বাস্তবায়ন হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ- আইএমইডির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে মোট ২৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ ব্যয় করা হয়েছে। এই ব্যয় মোট বরাদ্দের ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা বেশি। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথম প্রান্তিকে এডিপির ১০ দশমিক ২১ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছিল। এরপর আর কোনো অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের এডিপি বাস্তবায়ন হার ৯ শতাংশ ছাড়ায়নি।
এডিপি বাস্তবায়নের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এডিপি বাস্তবায়নে শুরুর এই ইতিবাচক অবস্থা আমরা অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাই। এই বাস্তবায়ন শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারলে এবার আমরা এডিপি বাস্তবায়নের টার্গেট পূরণ করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।
আইএমইডি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেশি বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ প্রায় ১৬ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ প্রায় ১৪ শতাংশ, সেতু বিভাগ ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয় প্রায় ১২ শতাংশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ১০ শতাংশ বরাদ্দ বাস্তবায়ন করেছে।
তবে বড় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে জাতীয় গড়ের চেয়ে কম এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ৩ দশমিক ২২ শতাংশ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ অর্থব্যয় করেছে।
চলতি অর্থবছরে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকার ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার এডিপি গ্রহণ করে। এরমধ্যে ৫৮ দশমিক ২১ শতাংশ বা ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৬ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে, ৩৬ শতাংশ বা ৯২ হাজার কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা থেকে এবং ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ বা প্রায় ৯ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন খাত থেকে আসছে।
আইএমইডি ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুতে বছরব্যাপী অর্থব্যয়ের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা করতেই সময় পার করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এ কারণে অর্থবছরের শুরুর দিকে এডিবিতে অর্থ ব্যয় কম হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপ ও নির্দেশনার কারণে এডিপি বাস্তবায়নে গতি বেড়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ে লাগাম টেনেছে। এ কারণেও অনেক প্রকল্পে অর্থব্যয় করা যাচ্ছে না। এটা না করা হলে এডিপি বাস্তবায়নের হার আরো বাড়ত।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। এখনই ব্যয় না করলে তেমন সমস্যা হবে না এমন প্রকল্পগুলোকে রাখা হয়েছে সি ক্যাটাগরিতে। এসব প্রকল্পের অর্থছাড় বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
বি ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলো বরাদ্দে ৭৫ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এসব প্রকল্পের ২৫ শতাংশ অর্থ ছাড় করা হবে না। গুরুত্ব বিবেচনায় এ ক্যাটাগরির প্রকল্পে শতভাগ অর্থই ছাড় করবে সরকার। বৈদেশিক অর্থায়নের সব প্রকল্প রাখা হয়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে।
প্রবা/রনি