পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১৬:৪৭ পিএম
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। ছবি : সংগৃহীত
কিছুদিন আগেও যে বন্দরটি ছিল কর্মযজ্ঞে ভরা, সেই বন্দরে এখন চলছে স্থবিরতা। নতুন করে আরোপ করা অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (আমদানি শুল্ক) প্রত্যাহারের দাবিতে ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের কারণে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে কমেছে সরকারের রাজস্ব আদায়। পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন বন্দরসংশ্লিষ্ট হাজারের বেশি শ্রমিক।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি হয় তার ৯৫ শতাংশই পাথর। আগে ভারত ও ভুটান থেকে প্রতিদিন অন্তত ৩৫০টি ট্রাকে পাথর আমদানি হতো। বন্দর দিয়ে টানা ২০ দিন ভারত থেকে এবং ৩০ দিন ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে ভারত ও নেপাল থেকে স্বল্পপরিসরে গমের ভুসি, আদা, পেঁয়াজ, মসুর ডাল আমদানি হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে সয়াবিন, র-জুট, কটন, গ্লাস, ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য ভারত ও নেপালে রপ্তানি হচ্ছে।
দেশের শুল্ক বিভাগ ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে পাথর আমদানিতে শুল্ক বাড়ালে আমদানিকারকরা পাথর আমদানি বন্ধ করে দেন। চিঠিতে বলা হয়, আমদানি করা প্রতি মেট্রিক টন ভারতীয় পাথরে (বোল্ডার) অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শুল্ক) ১২ ডলার থেকে ১৩ ডলার করা হয়েছে। এ ছাড়া ভুটানের পাথরে প্রতি মেট্রিক টনে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শুল্ক) ২১ থেকে বাড়িয়ে ২৪ ডলার করা হয়েছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগগিরই সমস্যা সমাধান করা হবে। তবে আমদানি বন্ধ হলেও রাজস্ব আদায় স্বাভাবিক রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে বোল্ডার পাথর আমদানিতে মেট্রিক টনপ্রতি শুল্ক ১২ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার প্রতিবাদে টানা ২০ দিন ধরে বন্দরে পাথর আমদানি করছেন না আমদানিকারকরা। এ ছাড়া ভুটান থেকে আমদানি করা পাথরের ট্রাকগুলোর স্লট বুকিংয়ের (অনলাইনে ফি দিয়ে নিবন্ধন ৬ চাকা পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০ ও ১০ চাকা বা তার বেশি ৫ হাজার টাকা) আওতায় আনতে ভারতের ফুলবাড়ী বন্দরে ট্রাক মালিক ও চালকরা আন্দোলন করছেন। এতে টানা এক মাস ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা এমনিতে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ডলার সংকটে ভালোভাবে এলসি করতে পারি না। ডলারের রেটও বেশি। যে কারণে আমদানি খরচ বাড়ছে। এদিকে আবার অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালুও বাড়ানো হয়েছে। এত বেশি ট্যাক্স হলে আমরা ব্যবসা করব কীভাবে। এসব বিষয়ের দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এমনিতেই আমরা অনেক ক্ষতির মধ্যে আছি।’
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপক ও ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভারত ও ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় বন্দরে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এতে রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এ ছাড়া বন্দরসংশ্লিষ্ট আরও প্রায় ১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় তারা সবাই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আমি আশা করছি শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’