× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শান্তি নিবাস প্রকল্পের গোড়ায় গলদ

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩ ১৪:৪৫ পিএম

শান্তি নিবাস প্রকল্পের গোড়ায় গলদ

অবহেলিত বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিদের আবাসনের ব্যবস্থা এবং তাদের সঙ্গে সহাবস্থানের ভিত্তিতে পারিবারিক আবহে শিশুদের বেড়ে ওঠার লক্ষ্যে ২০২০ সালে দেশের ৮ জেলায় সরকারি ৮টি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ফিজিবিলিটি স্টাডি বা সম্ভাব্যতা সমীক্ষা না করেই। ফলে নির্দিষ্ট সময়েও প্রকল্পটি শেষ হয়নি। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন প্রবীণারা এবং স্নেহবঞ্চিত হচ্ছে শিশুরাও। ‘৮টি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শষ্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পে উঠে এসেছে এমন চিত্র। বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক নিবিড় পরীক্ষণ সমীক্ষায় পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

জানা গেছে, ইতোমধ্যেই মূল ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) থেকে আরডিপিপিতে (সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ৫০ শতাংশ সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল ডিপিপিতে মেয়াদ ও প্রাক্কলন যথার্থ ছিল না বলেই এমনটি হয়েছে।

সংস্থাটির দ্বিতীয় খসড়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রকল্প তৈরি, অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন পর্যায়ে নানা জটিলতা দেখা দেখ। প্রকল্পটি তৈরির আগেই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হলে এগুলো এড়ানো যেতে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এ বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রতিবেদনে প্রকল্পের যে সমস্যাগুলো উঠে এসেছে সেগুলো আমরা চিঠি দিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাব। মন্ত্রণালয় তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবে।’

আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিপিপিতে উল্লেখিত বছরভিত্তিক যে ভৌত ও আর্থিক টার্গেট দেওয়া আছে, তা বাস্তবসম্মত মনে হয়নি। কারণ ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ পর্যন্ত দুই অর্থবছরের প্রকল্পের আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রকৃত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫ কোটি ৭০ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা অনেক কম। ডিপিপি তৈরির সময় প্রকল্পের নির্মাণকাজের লে-আউট-ড্রয়িংয়ের পাশাপাশি বিস্তারিত স্থাপত্য নকশাসহ ডিপিপি প্রণয়ন করা উচিত ছিল। কারণ স্ট্রাকচারাল, আর্কিটেকচারাল ও ই বা এম ড্রয়িংসহ ডিপিপি প্রণয়ন করা হলে প্রকল্পের মূল পরিবর্তনসহ নানা ধরনের জটিলতার একটি স্থায়ী সমাধান সম্ভব। সেই সঙ্গে সময় সম্পর্কে একটা ধারণাও পাওয়া যেত।

আইএমইডির খসড়া প্রতিবেদনে উঠে আসা দুর্বল দিকগুলো হচ্ছে, এই প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়নি। এটি একটি অন্যতম দুর্বল দিক। এ ছাড়া প্রকল্পের শুরুর তারিখ থেকে কিছুটা দেরিতে প্রকল্প অনুমোদন ও প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ হয়েছে। মূল ডিপিপির বাৎসরিক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ডিপিপি বা আরডিপিপিতে উপকারভোগী নির্বাচনের কোনো নীতিমালা নেই। এই প্রকল্পের ডিপিপি বা আরডিপিপিতে শান্তি নিবাসের পরিচালনা ও সেবাদানের জন্য জনবলের বিষয়টি স্পষ্টকরণ করা হয়নি। প্রকল্পের পূর্তকাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন করতে হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপিতে প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যান সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের শুরু থেকে গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৮ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা মোট প্রাক্কলন ব্যয়ের ৫৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। প্রকল্পের অর্জিত বাস্তব অগ্রগতি ৭৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ ছাড়া ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে পাঁচতলা ভিতের ওপর তিনতলাবিশিষ্ট মোট ৮টি শান্তি নিবাস ভবন নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮টি শান্তি নিবাস ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। অতিক্রান্ত বাস্তবায়ন সময়ের সঙ্গে অগ্রগতি সমানুপাতিকের চেয়ে কিছুটা কম রয়েছে। তবে সন্তোজনক বলা যায়। 

প্রকল্পের ডিপিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস স্থাপন নামে প্রকল্পটি ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই কমিটি অনুমোদন দেয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস স্থাপন নামে মন্ত্রণালয় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।

২০২০ সালের ২২ জুলাই প্রকল্প আরম্ভের তারিখ ২০২০ সাল ঠিক রেখে একনেক সভায় প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয় এবং ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর জিও অনুমোদন করা হয়।

দেখা যায়, ২০২০ সালে প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে শুরু হওয়ার পর ২০২১ সালে বাস্তবে রূপ নেওয়ার জন্য প্রায় আট মাস সময় নেয়। প্রকল্পের শান্তি নিবাস ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বালক-বালিকা এবং যেসব সরকারি শিশু পরিবারে সহজে বেশি জমি পাওয়া যাবে, সেসব সরকারি শিশু পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ৮২ কোটি টাকা। গত মাসেই শেষ হয়ে গেছে প্রকল্পটির মেয়াদ।

এদিকে শান্তি নিবাস (প্রবীণা), শেখ রাসেল দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, টুঙ্গিপাড়া প্রকল্পের অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। শান্তি নিবাস, সরকারি শিশু পরিবার, লালমনিরহাট প্রকল্পের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, ময়মনসিংহ প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ, সুনামগঞ্জ প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ, নোয়াখালী প্রকল্পের অগ্রগতি ৭২ শতাংশ, রাজশাহী প্রকল্পের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, খুলনা প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ এবং শান্তি নিবাস, সরকারি শিশু পরিবার, বরিশাল প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ শতাংশ।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা