যুক্তরাজ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি বানাবে টাটা

যুক্তরাষ্ট্রে বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রাসঙ্গিক উপাদান ব্যাটারি নির্মাণের প্ল্যান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছে ভারতীয় কোম্পানি টাটা। অটোমোবাইল খাতে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই কোম্পানি ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে দেশটিতে।

নতুন এই প্ল্যান্টটি দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের সমারসেটে নির্মিত হবে। যা দেশটিতে থাকা রেঞ্জরোভার, জাগুয়ার, ডিফেন্ডার ও ডিসকভারি গাড়ির কারখানায় ব্যাটারির চাহিদা মেটাবে। কারণ প্রত্যেক কোম্পানিই বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণের পথে হাঁটার পরিকল্পনা করেছে।

ব্রিটিশ সরকার বলছে, ২০২৬ সালের আগেই টাটার বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া কারখানাটি উৎপাদনে যেতে পারবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ব্যাটারিচালিত অটোমোবাইলে চাহিদার প্রায় অর্ধেক ব্যাটারি সরবরাহ করতে পারবে।

এ ছাড়া ব্রিটিশ সরকার চাইছে ২০৩০ সালের মধ্যে নতুন পেট্রোল ও ডিজেলচালিত যানবাহনের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুরোপুরি বৈদ্যুতিক গাড়ির জগতে প্রবেশ করতে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনে যুক্তরাজ্যের জিরো কার্বনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা পূরণও সম্ভব হবে। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে ব্যাপক ব্যাটারির চাহিদা তৈরি হবে।  

ফ্যারাডে ইনস্টিটিউশন বলছে, এ সময়ের মধ্যে তারা অনুমান করছে ইংল্যান্ডে ব্যাটারির চাহিদা ঘণ্টাপ্রতি ১০০ গিগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।

এদিকে নির্দিষ্ট কিছু সুবিধার বিনিময়েই কেবল বিনিয়োগে রাজি হওয়ার কথা টাটার। কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকার এই চুক্তির অংশ হিসেবে কী কী সহায়তা করবে, তা জানাতে অস্বীকার করেছে কোম্পানিটি। টাটার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো ছাড়া তেমন কিছু বলেনি ব্রিটিশ সরকারও।  

যদিও টাটার এই বিনিয়োগের খবর এমন সময় এলো যখন চীন ইলেকট্রিক গাড়ির খাতে বহুদূর এগিয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে যুক্তরাজ্যের ব্যর্থতার বিষয়টি দেশটির গণমাধ্যমে বারবার আসছে। যুক্তরাজ্যের মাটিতে নিজস্ব ব্যাটারি প্ল্যান্টের অভাবকেই এজন্য অনেকাংশে দায়ী করা হচ্ছিল। সেই হিসেবে টাটার এই উদ্যোগ বিদ্যুৎচালিত গাড়ির খাতে দেশটিতে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এক বিবৃতিতে এই বিনিয়োগ সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমাদের গাড়ি উৎপাদন শিল্প ও দক্ষ শ্রমিকদের সামর্থ্যের প্রমাণ হলো যুক্তরাজ্যে নতুন ব্যাটারি তৈরির কারখানায় টাটা গ্রুপের মাল্টি-বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ।’

ব্রিটিশ সরকার বলছে, এ বিনিয়োগের মাধ্যমে ৪ হাজার ব্যক্তির সরাসরি কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ভবিষ্যতে এ-সংক্রান্ত কাজে আরও বেশি মানুষ নিজের আয়ের উৎস তৈরি করতে পারবে।  

টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে টাটা গ্রুপ যুক্তরাজ্যের প্রতি তার প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করেছে।

টাটার এই নতুন বিনিয়োগের ঘোষণার পর ভারতের শেয়ারবাজারে টাটা মোটরসের শেয়ারের দর ২ শতাংশ বেড়েছে।

সূত্র : গ্যাজেটস ৩৬০