× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রকৃত সুবিধাভোগী শহরের গ্রাহক

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৩ ২১:০৬ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যেই চালু হয়েছিল এজেন্ট ব্যাংকিং। কিন্তু এই সেবায় আমানত ও ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে বৈষম্য। চালুর পর থেকে ৭৬ দশমিক ২৭ শতাংশ আমানত গ্রাম থেকে সংগৃহীত হয়েছে। অথচ সেখানে ঋণ গেছে মাত্র আমানতের ৩১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চালুর পর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ২০ হাজার ৭৩৬টি এজেন্ট বুথের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৩ গ্রাহক হিসাব খুলেছে। এই সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ঋণ বিতরণ হয় মাত্র ১১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এ সময় পর্যন্ত আমানতের ৩৭ শতাংশেরও কম ঋণ বিতরণ হয়েছে এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে।

এ ছাড়া মার্চ পর্যন্ত গ্রাম থেকে সংগৃহীত আমানতের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা, যা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সংগৃহীত মোট আমানতের ৭৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। অন্যদিকে গত মার্চ পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় গ্রামে ঋণ বিতরণ হয়েছে ৭ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। এটি গ্রাম থেকে আসা আমানতের মাত্র ৩১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে শহরে আমানত এসেছে ৭ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। আর ঋণ বিতরণ হয়েছে ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকা, যা শহর থেকে আসা মোট আমানতের প্রায় ৫৪ শতাংশ। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালুর পর অন্তত ১১ ব্যাংক এর গ্রাহকদের এক টাকারও ঋণ বিতরণ করেনি। অথচ ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করেছে। এ তালিকায় আছে এনআরবিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। এ ছাড়া সাউথইস্ট, মধুমতি, সোশ্যাল ইসলামী ও এবি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ পরিস্থিতিও সন্তোষজনক নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এর বাইরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে অব্যবহৃত আমানতের অধিকাংশই ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে শহরেই বিনিয়োগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নেতিবাচক দিক হলো এর মাধ্যমে গ্রামের সম্পদ শহরে স্থানান্তর হচ্ছে। এটা অনেকটা অর্থ পাচারের মতো, যেন দেশ থেকে টাকাটা বিদেশে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো বিকল্প উপায় না পেয়ে তাদের কষ্টার্জিত সঞ্চয়ের টাকা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত জমা করছে। এতে ব্যাংকগুলোর আমানত ফুলে-ফেঁপে উঠছে। কিন্তু ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে শহরকেই প্রাধান্য দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ফলে পিছিয়ে পড়ছে গ্রামীণ অর্থনীতি।

২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালায় প্রথমে শুধু পল্লী এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিং করার সুযোগ দেওয়া হলেও পরের বছর নীতিমালা কিছুটা সংশোধন করে পৌর ও শহর অঞ্চলেও এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৩১টি ব্যাংকে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যার সবগুলোই কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবাকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এটা ব্যাংকের খরচও বাঁচিয়েছে। গ্রাহকরাও কম খরচে ও দ্রুত সময়ে ব্যাংকে না গিয়েও প্রায় সব সেবা পাচ্ছে এজেন্ট বুথে। এখন বাসাবাড়ির নিচে বা বাসাবাড়ি থেকে একটু দূরে স্থানীয় হাটবাজারে এজেন্ট আউটলেট বা বুথেই ব্যাংকের মতো প্রায় সব ধরনের সেবা পাওয়া যাচ্ছে। অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা থেকে শুরু করে আমানতের টাকা জমা ও উত্তোলন, মোবাইল টপ-আপ, টাকা স্থানান্তর (দেশের ভেতর), রেমিট্যান্সের অর্থ উত্তোলন, ইউটিলিটি বিল এবং যানবাহনের লাইসেন্স ও ফিটনেস ফি গ্রহণ, বিভিন্ন ধরনের ঋণ বিতরণ ও আদায় এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সব ধরনের ভাতা এ সেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এ সেবায় বাড়তি কোনো চার্জও নেই। এ ছাড়া ডেবিট কার্ড, চেকবই ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সুবিধাও নিতে পারেন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকরা। রয়েছে বায়োমেট্রিক বা হাতের আঙুলের স্পর্শের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা করার সুযোগও। ফলে এ সেবার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।

এদিকে গত সপ্তাহে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত মে শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৪৫২ জন। আর আমানত বেড়ে হয়েছে ৩২ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা