সরকারি ক্রয় কমিটির অনুমোদন
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩ ২০:১০ পিএম
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩ ২১:৪২ পিএম
বিএসসির একটি জাহাজ। সংগৃহীত ছবি
নতুন চারটি জাহাজ কেনার অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি)। বুধবার (১২ জুলাই) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই চীনে নতুন এই চারটি জাহাজের নির্মাণকাজ শুরু হবে।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মো. জিয়াউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিএসসির চারটি নতুন জাহাজ কেনার প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আর তেমন কোনো বাধা নেই। এখন চীন সরকারের সঙ্গে ঋণ নিয়ে একটি চুক্তি হবে। এর পরপরই জাহাজের নির্মাণকাজ শুরু হবে।
এক প্রশ্নের জাবাবে জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা আশা করছি, বাকি প্রক্রিয়া আগস্ট মাসের মধ্যে শেষ হবে। এরপরেই আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাহাজ চারটির কিল লেয়িং (নির্মাণ শুরু) অনুষ্ঠান করতে পারব।’
এর আগে দেশের আমদানি-রপ্তানির অগ্রগতির বিষয় মাথায় রেখে জ্বালানি তেল পরিবহনে ১ লাখ ১৪ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণ ক্ষমতার দুটি মাদার ট্যাংকার এবং কয়লা, সিমেন্ট ক্লিংকার, গম জাতীয় পণ্য পরিবহনে ৮০ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণ ক্ষমতার দুটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার কেনার এই প্রকল্প হাতে নেয় বিএসসি। প্রকল্পটি গত ১৮ এপ্রিল একনেক সভায় পাশ হয়। জিটুজি ভিত্তিতে নেওয়া চারটি জাহাজ কেনার এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬২০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যার মধ্যে চীন থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। বাকি ১৩৪ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়ন থেকে যোগান দেবে বিএসসি। নতুন চারটি জাহাজ নির্মাণে বিএসসিকে এই ঋণ দেবে চীনেরএক্সিম ব্যাংক।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজগুলো তৈরি করবে চায়না মেশিনারিজ ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর সেপ্টেম্বর মাসে নির্মাণকাজ শুরু হলে জাহাজগুলো তৈরি করতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে দুই বছর। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের মধ্যে জাহাজগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হবে। সেই হিসাবে ২০২৫ সালের শেষ দিকে বিএসসির বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে এ চারটি জাহাজ। জাহাজগুলো বিএসসির বহরে যুক্ত হলে একদিকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বাড়বে। অন্যদিকে তৈরি হবে কর্মসংস্থান, সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাহাজ চারটি পরিচালনার জন্য বছরে ২৫০ জন মেরিন অফিসার এবং ক্রুর প্রয়োজন হবে। বর্তমানে বিএসসির বহরে ৮টি জাহাজ রয়েছে নতুন এই চারটি জাহাজ যুক্ত হলে বিএসসির বহরে মোট জাহাজ হবে ১২টি।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আমদানি করা তেল পরিবহনে ব্যবহারের জন্য নতুন এই মাদার ট্যাংকার দুটি কেনা হচ্ছে। জাহাজ দুটির মাধ্যমে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নিজস্ব সময়সূচি অনুযায়ী মাদার ট্যাংকারে জ্বালানি পরিবহন করা হবে। ১ লাখ ১৪ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণ ক্ষমতার এই জাহাজে তেল এনে ইস্টার্ন রিফাইনারির উদ্যোগে নির্মিত ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং পাইপ লাইনের মাধ্যমে সাগর থেকে সরাসরি ইস্টার্ন রিফাইনারিতে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।
অন্যদিকে ৮০ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণ ক্ষমতার দুটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ারে খাদ্য বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থার জন্য গম, চাল, সিমেন্ট ক্লিংকার, সারের মতো পণ্য পরিবহন করা যাবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক রুটে জাহাজ ভাড়া দিয়ে আয় করা যাবে বৈদেশিক মুদ্রা।