× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন শূন্য

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩ ১৩:৩২ পিএম

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন শূন্য

বিদায়ি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত একটি টাকাও খরচ করেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, দেশের বাইরে বাস্তবায়িত ৭ প্রকল্পেও কোনো অর্থ ছাড় করা হয়নি। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরে বরাদ্দের ৪০ শতাংশ বা ৫১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খরচ করেছিল মন্ত্রণালয়টি। মূলত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় ডলার সংকটে রয়েছে সরকার। তাই দেশের বাইরে যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে সেগুলোতে ডলারের অভাবে অর্থছাড় বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য দেখা যায়, গত অর্থবছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাতটি প্রকল্পে ৯০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে বছর শেষ হলেও মন্ত্রণালয়টি দেশের বাইরের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি। গত অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নে শূন্য অগ্রগতি শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই ছিল।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ডলার সংকটের কারণে অর্থছাড় হয়নি এটা আমার মনে হয় না। কারণ এই সমস্যাটা নতুন না, দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন না হলে দেখা যায়, সময় বেশি লাগে আবার প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যায়। তাই অর্থ ছাড় না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। 

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, সব সময়ই দেশের বাইরে বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পগুলোতে ধীরগতি থাকে। প্রকল্পগুলো দেশের বাইরে বাস্তবায়ন হওয়ায় সঠিকভাবে মনিটরিং হয় না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলো মূলত বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ। মূলত ভূমি পেতে জটিলতা, বাস্তবায়নে ধীরগতিসহ নানা কারণে দেরি হয়। তবে এবার ডলার সংকটের কারণে অর্থ ছাড় না হওয়ায় সব প্রকল্পই পিছিয়ে গেল।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ডলারের অপচয় রোধ করতে সরকার এবার দেশের বাইরে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোতে অর্থছাড় করেনি। দেশীয় অর্থায়নের যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক কেনাকাটা ছিল সে খাতেও খরচ করতে দেওয়া হয়নি। বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয় তেমন কোনো প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। ডলার সংকট কাটাতে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলোই এবার বেশি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানা যায়, পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পটি ২০০৭ সালে শুরু হয়। তবে ১৬ বছর পরও প্রকল্পটি শেষ হয়নি। সম্প্রতি পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সে প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তার ব্যয় এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা। নতুন করে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

বন্দর সেরি বেগওয়ান বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও হাই কমিশনারের বাসভবন নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শুরু হয় ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি। গল্পটি ৮৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভুটানের থিম্পুতে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৮ সালে শুরু হয়। জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অগ্রগতি নেই। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৮ সালে শুরু হয়। যা ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির খরচ ধরা হয়েছে ১০৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ হাউস নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৯ সালে শুরু হয় যা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৯ সালে শুরু হয় যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২১ সালে শুরু হয়েছে, যা ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির খরচ ধরা হয়েছে ১৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকার ১৭৩টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা। এর মধ্যে বিদেশি অর্থায়ন রয়েছে ৬৯ হাজার ৮৬১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এ অঙ্ক মোট অনুমোদিত অর্থের ৪৪ শতাংশ। বাকি অর্থায়ন সরকারের ও সংস্থাগুলোর নিজেদের। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৮টি একনেক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। 

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতার অভাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস শেষে (জুলাই-মে) সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে সরকার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই হার ছিল ৬৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা