প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৩ ১৩:৪৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
সেচ মৌসুমে গ্রিডের ওপর বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাপ হ্রাস করতে এবং নিরবচ্ছিন্ন সেচব্যবস্থা চালু করতে ২০১৮ সালে ৪০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই হাজারটি সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প স্থাপনে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। তবে দুই বছরের প্রকল্পটি শেষ হয়নি পাঁচ বছরেও। নতুন করে ফের দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ৪০৭ কোটি টাকা প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯৪ কোটি টাকা।
গত ২০ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির খরচ বাড়িয়ে ৫৯৪ কোটি টাকা এবং দুই বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ মেয়াদে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। প্রকল্পটি দেশের আটটি বিভাগের ২২টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রকল্পের সময় ও খরচ বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রকল্পের আওতায় সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্প স্থাপনের জন্য এ পর্যন্ত ৬৩৩ জন কৃষক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। অবশিষ্ট কৃষক সংগ্রহ, স্থাপিত পাম্পসমূহের গ্রিড ইন্টিগ্রেশন কাজের জন্য পুনঃদরপত্র আহ্বান করে ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রয়োজন এবং বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন।
প্রকল্পটি নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষি সেচের জন্য সোলার ফটোভোল্টাইক পাম্পিং সিস্টেমের বিস্তার, সেচ মৌসুমে গ্রিডের ওপর বিদ্যুতের হঠাৎ অতিরিক্ত চাপ হ্রাস করা এবং ডিজেলচালিত পাম্প পরিহারের মাধ্যমে দূষিত পদার্থের নির্গমন হ্রাস করা।
প্রকল্পের মূল কাজ হচ্ছে, প্রকল্প এলাকায় পাঁচ ক্যাটাগরির মোট দুই হাজারটি সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প স্থাপন। এর মধ্যে ২.২ কিলোওয়াটের ৫০০টি, ৪.০ কিলোওয়াটের ৫৩০টি, ৫.৫ কিলোওয়াটের ৫০০টি, ৭.৫ কিলোওয়াটের ৩২০টি এবং ১১.০ কিলোওয়াটের ১৫০টি সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পটির অনুকূলে মোট ১১৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০২১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে সংযোজনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং এ প্রেক্ষিতে ৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছিল। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বর্ণিত ১০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে সোলার ও উইন্ড পাওয়ারের প্রতি অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অর্জিত মোট নবায়নযোগ্য জ্বালানির হার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আলোচ্য প্রকল্পের মাধ্যমে দুই হাজারটি সোলার পাম্প স্থাপিত হলে সোলার প্যানেলের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হবে প্রায় ১৯.৩ মেগাওয়াট (পিক), যা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেচ মৌসুমে গ্রিডের ওপর বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাপ হ্রাস পাবে। বছরে প্রায় ৮০ লাখ ৫৯ হাজার লিটার ডিজেল সাশ্রয় হবে, ফলে প্রতিবছর প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পাবে এবং পরিবেশ দূষণ কমবে।
এ ছাড়াও পরিবেশবান্ধব এ পাম্পসমূহ সেচকাজে ব্যবহারের পর অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে বিক্রয় করা যাবে, যা পাম্প ব্যবহারকারী এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।