প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩ ১৫:০৯ পিএম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৩ ১৫:২৯ পিএম
অর্থ সাশ্রয় এবং দুর্নীতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়পত্র ইস্যু করবে। এ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে আয় সরাসরি সুবিধাভোগীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোনালী ব্যাংক শাখা এ সঞ্চয়পত্র ইস্যু করবে, যা সুবিধাভোগীরা পারিবারিক সঞ্চয়পত্র হিসেবে পাবেন। এ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের সমান হবে।
অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলতাফ উল আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে নগদ অর্থের পরিবর্তে সঞ্চয়পত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ সরকারের অর্থ সাশ্রয়সহ সুবিধাভোগী উভয়ের জন্যই ইতিবাচক হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে অর্থ সাশ্রয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবে, যা চলমান আর্থিক সংকট কমাতে সাহায্য করবে। দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি নগদ লেনদেনও বন্ধ থাকবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী যেসব পরিবারকে সহায়তা দেবেন, তারা সঞ্চয়পত্রের সুদ থেকে তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পারবেন, তবে তাদের মূল অর্থ আমানত হিসেবে থাকবে। এসব সঞ্চয়পত্রের পাঁচ বছর পর মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র সরবরাহ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৩৫ হাজার মানুষকে অনুদান হিসেবে ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে ১৪০ কোটি, ২০২০ সালে ৫৮০ কোটি, ২০২১ সালে ৩২৪ কোটি এবং চলতি বছরের ২ মে পর্যন্ত ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর অর্থের স্থায়ী উৎস হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে পরিবারপ্রতি ১০ থেকে ২০ লাখ টাকার এফডিআর তৈরি করেন। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ৬৬ জনকে অনুদানও দেওয়া হয়েছিল। তাদের যদি নতুন কোনো অনুদান দেওয়া হয়, তবে তা সরাসরি তাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সঞ্চয়পত্র হিসেবে দেওয়া হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবং অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে নগদ অর্থের পরিবর্তে সঞ্চয়পত্র দেওয়া হলে সুবিধাভোগী পরিবার তা থেকে পাওয়া মুনাফা দিয়ে তাদের দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে পারবে। কিন্তু নগদ টাকা দিলে তা খরচ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নগদ টাকার পরিবর্তে সঞ্চয়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রাণ তহবিল থেকে সঞ্চয়পত্র দেওয়া হলে কোষাগারে অর্থের প্রবাহ কিছুটা বাড়বে। কিন্তু একই সঙ্গে সুদের দায়ও বাড়বে। তবে এটিকে সার্বিক ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখা যেতে পারে।’
চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ২০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা।