× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এত পার্থক্য আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারে!

সোহেল চৌধুরী

প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩ ১০:০৯ এএম

আপডেট : ১৬ জুন ২০২৩ ১১:২১ এএম

এত পার্থক্য আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারে!

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বেশ সরগরম দেশের বাজার। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার দোহাই দিয়ে দেশের বাজারে ঘণ্টার ব্যবধানে বাড়ছে প্রতিটি পণ্যের দাম। তবে বিপরীত চিত্র হচ্ছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলেও তার সুফল খুব একটা মিলছে না দেশের বাজারে। এর পেছনে বাজারে প্রতিযোগিতার অভাবের পাশাপাশি সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্ববাজার ও দেশের বাজারের অমিলের বিষয়টি উঠে এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স সভায়। সভায় স্বীকার করা হয়, কয়েকটি অত্যাবশ্যক পণ্য ভোজ্য তেল, আটা, ময়দা ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে মূল্য হ্রাস পেয়েছে স্থানীয় বাজারে তার প্রতিফলন নেই। একই সঙ্গে বাজারে যথেষ্ট প্রতিযোগিতার ঘাটতি রয়েছে।

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে প্রতি টন গমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে, বিপরীতে দেশের খুচরা বাজারে আটার দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ। চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৩৩ শতাংশ বাড়লেও দেশের বাজারে বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। সয়াবিনের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৪৪ শতাংশ কমেছে, দেশের বাজারে কমেছে মাত্র ২ শতাংশ। একইভাবে পাম অয়েলের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে ৪৯ শতাংশ, দেশের বাজারে কমেছে ২০ শতাংশ। পেঁয়াজের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৬৩ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে বেড়েছে ৯৩ শতাংশের বেশি। রসুনের দাম বিশ্ববাজারে ১৬ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে বেড়েছে ৯৩ শতাংশ। একইভাবে আদার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১৭২ শতাংশ বেড়েছে, আর দেশে বেড়েছে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত।

গত ১১ মাসের উৎপাদন, আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছেÑ দেশের বাজারে বছরে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন হলেও ১১ মাসে এর ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। একইভাবে আদার চাহিদা সাড়ে চার লাখ টন, সেখানে ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। বছরে গমের চাহিদা ৭০ লাখ টন, বিপরীতে এ সময়ে ঘাটতি ২৪ লাখ টন। দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন, বিপরীতে ১১ মাসে উদ্বৃত্ত ১১ লাখ টন। পেঁয়াজের চাহিদার চেয়ে বাজারে উদ্বৃত্ত থাকার পরও দাম ৯৩ শতাংশ বেড়েছে দেশের বাজারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ১১ মাসের চাহিদা বিবেচনায় চিনি, গম ও আদা ব্যতীত অন্য কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি নেই।

বাজারে পণ্যের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের সুপারিশে বলছে, অত্যাবশ্যক পণ্যের ক্ষেত্রে স্পেসিফিক শুল্কারোপ, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজ, আদা ও রসুন মজুদকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ, চাষি সুরক্ষায় আমদানি বন্ধ না করে মৌসুমি কর আরোপ, ভোজ্য তেল ও চিনি বাজারজাতে শতভাগ ভোক্তা প্যাক নিশ্চিত করা, টিসিবির পণ্য স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সংগ্রহের ব্যবস্থা করা, অত্যাবশ্যক পণ্যের ক্ষেত্রে টিসিবির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করে বাজার ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া, পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন পলিসিগত ও কাঠামোগত ঘাটতি অনুসন্ধান ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের এলসি খোলার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডলার সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং শতভাগ মার্জিনের শর্ত শিথিল করা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডলার সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। একই সঙ্গে এসব পণ্য শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ট্রানজেকশন ভ্যালুর পরিবর্তে ইনভয়েস ভ্যালু বিবেচনায় শুল্কায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

এ বিষয়ে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বাজারে পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে সরকারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ রাখতেই হবে। প্রতিযোগিতা নিশ্চিত হচ্ছে কি না তা যথাযথভাবে দেখতে হবে। ভোক্তাস্বার্থ রক্ষার্থে অসাধুদের অধিক মুনাফা লাভের যে আকাঙ্ক্ষা তার দৌরাত্ম্য কমিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে নিয়মিত তদারক ব্যবস্থায় জোর দিতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে দায়িত্ব রয়েছে তা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে পালন করে যেতে হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা