× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভুটানে দ্বিগুণ ব্যয়ে চ্যান্সারি ভবন নির্মাণের প্রস্তাব

এমআর মাসফি

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:৫৭ পিএম

আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:৪২ পিএম

ভুটানে দ্বিগুণ ব্যয়ে চ্যান্সারি ভবন নির্মাণের প্রস্তাব

ভুটানের থিম্পুতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাসস্থান ও সুবিধাজনক কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চ্যান্সারি কমপ্লেক্স এবং রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণে বাংলাদেশের তুলনায় দ্বিগুণ ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছেযা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

ভুটান দূতাবাসের পাঠানো প্রস্তাবনায় দেখা যায়, ৪ হাজার ২১০ বর্গমিটার বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স, রাষ্ট্রদূতের বাসভবন, অফিসার ও স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ কোটি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ ১ বর্গমিটার নির্মাণে খরচ পড়ছে ৮০ হাজার ৮০০ টাকা। যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ভবন নির্মাণে ২০২২ রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় হচ্ছে ৪০ হাজার টাকার কম। বেশি ব্যয়ের বিষয়ে ভুটানের কাজের রেট শিডিউল চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

এদিকে প্রকল্পটিতে ৩৬ জন পরামর্শকের জন্য ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। যেখানে প্রতি মাসে পরামর্শকে ব্যয় হবে ৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা। নতুন করে পরামর্শকের কাজে ৪৭ লাখ টাকা বেশি চাওয়া হয়েছে। তাই এ খাতে ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিৎ কর্মকার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা বেশি ব্যয়ের বিষয়ে পিইসি সভায় জানতে চাইব। আমরা তাদেরকে ভুটানের রেট শিডিউল দিতে বলেছি।’

এদিকে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পূর্ত কাজের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে যেমনমূলধন অংশে চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ বাবদ ২৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা থেকে ৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বৃদ্ধি করে ৩৪ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম বাবদ ৪ কোটি টাকার পরিবর্তে ২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অর্থাৎ ১৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি পিইসির সভায় এসব অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।’

কর্মকর্তারা বলেন, ভুটানে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স এবং রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৮ সালে অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিকে অনুমোদনের ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। নতুন করে আরও ২১ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কাজের এ ধীরগতি নিয়েও ক্ষুব্ধ কমিশন।

প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছেভুটানের থিম্পুতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাসস্থান ও সুবিধাজনক কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করা, বর্তমান ও ভবিষ্যতের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে যথোপযুক্ত ভৌত সুবিধা নির্মাণ এবং ভুটানের থিম্পুতে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব জমির যথাযথ ব্যবহার করতেই প্রকল্পটি নেওয়া হয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভুটানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক গতি লাভ করে। সেই সময়  প্রধানমন্ত্রী জেলোতে ভুটানের রাজা, প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন। সেখানে বাংলাদেশ ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয় এবং এর মাধ্যমে ভুটান বাংলাদেশকে দূতাবাস নির্মাণের জন্য ৬৫ হাজার ৩৪০ বর্গফুট বা ১ দশমিক ৫ একর জমি প্রদান করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুটানের থিম্পুতে কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ দূতাবাস নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত হয়।

জানা যায়, ভুটান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ হওয়ায় শুরু থেকেই ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের উষ্ণ সম্পর্ক বিরাজমান। ভুটান একমাত্র দেশ, যার সঙ্গে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। ভুটানে বাংলাদেশের ৯০টি পণ্য এবং বাংলাদেশে ভুটানের ১৮টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা চালু রয়েছে। এরপরও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি চোখে পড়ার মতো। ২০১৬ সালে ভুটান থেকে ২৩০ কোটি ডলার মূল্যের আমদানি বাণিজ্যের বিপরীতে বাংলাদেশ রপ্তানি করে মাত্র ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য। ভুটানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এই বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নতুন করে ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে ভুটান দূতাবাস বলছে, প্রকল্পের প্রস্তাবিত নির্মাণ অঙ্গের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পর দরপত্র প্রকাশিত হওয়ায় কোনো নির্মাণ কোম্পানি সাড়া দেয়নি। ফলে দরপত্র দাখিলের সময়সীমা দুবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তীতে দরপত্র দাখিল করা তিনটি কোম্পানির মধ্য থেকে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দুটি কোম্পানিকে উপযুক্ত বলে বিবেচনা করে। কিন্তু তাদের উদ্ধৃত মূল্য নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩৪ শতাংশ ও ১৬ শতাংশ বেশি হওয়ায় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি পুনরায় দরপত্রের সুপারিশ করে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী বায় পুনঃপ্রাক্কলন করা হয়েছে। এতে প্রকল্প ব্যয় ২১ কোটি ১১ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত দুই বছর বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

নতুন করে ২১ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৪২ দশমিক ৬৮ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি করে ৭০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। আর বাস্তবায়নকাল ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত অর্থাৎ অনুমোদিত মেয়াদকাল হতে দুই বছর বেশি নির্ধারণ করে ১ম সংশোধন প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স, রাষ্ট্রদূতের বাসভবন, অফিসার ও স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ-৪০১০ বর্গফুট, ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম, আসবাব ক্রয় ইত্যাদি।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির ক্রম-পুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকাযা মূল প্রকল্প ব্যয়ের মাত্র ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ১ শতাংশ।

প্রবা/আরএম/ এমআই

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা