প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩ ২২:০৮ পিএম
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে পণ্যের অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে হবে। এ জন্য গুণগত মানসম্পন্ন অবকাঠামো নিশ্চিত করা প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
রবিবার (১১ জুন) বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ভবিষ্যৎ বিশ্ব বাণিজ্যে অ্যাক্রেডিটেশন’ বিষয়ক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি পণ্য ও সেবার মান ধরে রাখতে পারি, তাহলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আমাদের পণ্যের রপ্তানি সম্প্রসারণে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। দেশীয় অর্থনীতির সম্প্রসারণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের আস্থা বৃদ্ধিকল্পে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং পরিবেশ প্রভৃতি শিল্প খাতের সঙ্গে অ্যাক্রেডিটেশন বেশি মাত্রায় জড়িত।’
সেমিনারে শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অ্যাক্রেডিটেশনের কোনো বিকল্প নেই। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে উদ্যোক্তাদের পণ্যের মান বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১২৪টি প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করা হয়েছে। অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় ব্যয় হ্রাস ও সময় বাঁচাতে সহায়তা করবে। বর্তমানে বাংলাদেশের ২১টি পণ্যের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ ভারতের ‘ইন্ডিয়া ন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড লিমিটেড (এনএবিএল)’ হতে গ্রহণ করতে হয়।’
শিল্প সচিব আরও বলেন, বিএবি সম্প্রতি হালাল পণ্যের অ্যাক্রেডিটেশন প্রদান উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যা এ খাতের পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এ সময়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশ একটি আমদানি নির্ভর দেশ হতে ক্রমেই রপ্তানিমুখী দেশে পরিণত হচ্ছে। ২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৪১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক বাণিজ্যে নিজেদের পণ্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে অ্যাক্রেডিটেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৬ পরবর্তী সময়ে আমাদের স্থানীয় উৎপাদিত পণ্যের কমপ্লাইয়েন্স বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও জিএসপি প্লাসসহ অন্যান্য বিষয়ে বাণিজ্য সুবিধা আদায়ে আমাদের অ্যাক্রেডিটেশনের ওপর আরও বেশি হারে জোর দিতে হবে। শিল্প খাতে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি টেকসই পরিবেশ তৈরিতে অ্যাক্রেডিটেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিএবির মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব এখন জোর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে। এর ফলে নিত্য-নতুন প্রযুক্তির দুয়ার উন্মোচিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও মুক্ত বাজার অর্থনীতির প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে বাণিজ্যের সম্প্রসারণে অ্যাক্রেডিটেশনের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, অ্যাক্রেডিটেশন পণ্য ও সেবাভুক্ত সব দেশে বিনা বাধায় প্রবেশ করতে পারে। যা বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। আন্তর্জাতিক অ্যাক্রেডিটেশন ফোরামের সদস্যপদ অর্জনের লক্ষ্যে বিএবি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।