প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩ ১৯:৪৪ পিএম
ফাইল ফটো
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৬৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের। গত বছরের এপ্রিলে যার পরিমাণ ছিল ৩২৮ কোটি ২৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের পোশাক আমদানি তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ওটেক্সার হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানি কমেছে ২২ দশমিক ১৫ শতাংশ। দেশটি চলতি বছরের এপ্রিলে পোশাক আমদানি করেছে ২ হাজার ৫১২ কোটি ১২ লাখ ডলার, যা ২০২২ সালের এপ্রিলে ছিল ৩ হাজার ২৩৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার।
ওটেক্সার তথ্য বলছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, যুক্তরাষ্ট্র আমদানি কমিয়েছে চীন, ভিয়েতনাম, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়া থেকেও। যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চীন থেকে পোশাক আমদানি করেছে ৪৫১ কোটি ১৭ লাখ ডলার, যা ২০২২ সালের এপ্রিলে ছিল ৬৬৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ৩২ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
একইভাবে ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনাম থেকে পোশাক আমদানি করেছে ৪৩৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, যার পরিমাণ ২০২২ সালের এপ্রিলে ছিল ৬০১ কোটি ১৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ২৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ সময়ে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি কমিয়েছে ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করেছে ১৭৫ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পোশাক, যা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ছিল ২১০ কোটি ১৩ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র আমদানি কমিয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকেও। এ দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক আমদানি কমিয়েছে ২৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া থেকে ১৫১ কোটি ২৫ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছে, যার পরিমাণ গত বছরের এপ্রিলে ছিল ২০৩ কোটি ২০ লাখ ডলার।
ওটেক্সার পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে তৃতীয় বৃহত্তম উৎস। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৯৭৪ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে, যার পরিমাণ তার আগের বছরে ছিল ৭১৪ কোটি ডলার। এরই ধারাবাহিতকতায় ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার ছিল ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি আয় নেতিবাচক ধারায় কেন জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খুচরা কেনাকাটা অনেক কমেছে। এই বাজার কবে নাগাদ ঠিক হবে, তা বলাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর সব কিছু নির্ভর করছে। তবে বলা যায়, ২০২৩ সাল পুরোটাই এমন যাবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু অন্যান্য দেশ থেকেও আমদানি কমিয়েছে।’
কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ ভালো থাকলেও বিদ্যুৎ তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক টানাপড়েনে আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। ব্যবসা-বাণিজ্য এখানে ভিন্ন বিষয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা যাই হোক না কেন আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে না বলে আশা করছি।’