× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুটি কারণে বাড়ছে আদার দাম

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৩ ১৫:১৫ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

গত ৩ জানুয়ারি ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে মিয়ানমারের প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। খাতুনগঞ্জে এখন ওই আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা দরে। গত পাঁচ মাসে কেজিতে মিয়ানমারের আদার দাম বেড়েছে অন্তত ১৭০ টাকা। এর মধ্যে গত এক মাসেই বেড়েছে ১০০ টাকা। চায়না থেকে আদা না আসা এবং পণ্য আমদানিতে ব্যাংক ড্রাফট বন্ধ থাকায় বাজারে আদার সংকট তৈরি হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই কারণে বাজারে আদার দাম বাড়ছে। প্রথমত, চায়না আদা আমদানি শূন্যের কোঠায় আসায় বাজারে আদার সরবরাহ কম। তাই বাজারে আদার দাম বাড়ছে। অন্যদিকে ব্যাংক ড্রাফট বন্ধ থাকায় মিয়ানমারের আদা আমদানিতে খরচ বেড়েছে। ব্যাংক ড্রাফট বন্ধ থাকায় স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, যাদের কাছে ব্যাংক ড্রাফট আগে করা ছিল তারা ব্যাংক ড্রাফটের ওপর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশন নিয়েছেন। এতেই আদা আমদানিতে কেজিতে খরচ বেড়ে যায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। 

আদা আমদানিকারক মেসার্স খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংয়ের বিপণন কর্মকর্তা অজিত বাবু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ব্যাংক ড্রাফট বন্ধ থাকায় যাদের কাছে আগে ব্যাংক ড্রাফট করা ছিল, তাদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে ব্যাংক ড্রাফট কিনে আদা আমদানি করতে হয়েছে। আমদানিমূল্যের ওপর আগে যেখানে ২০ টাকা বাড়তি খরচ হতো, সেখানে গত মাসে আমাদের কেজিতে বাড়তি খরচ হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বাড়তি ওই খরচ সমন্বয় হওয়ার কারণেই বাজারে আদার দাম বাড়ছে।’ তবে গত ২৫ মে থেকে ব্যাংক ড্রাফট দেওয়া শুরু করেছে ব্যাংক। তাই সামনে মিয়ানমারের আদার দাম কমতে পারে বলে জানান তিনি।

চায়নায় আদার বুকিং রেট বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে চায়না আদা আমদানি। তাই সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প দেশ থেকে আদা আমদানি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। শুরু হয় মিয়ানমার, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আদা আমদানি। 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত চার মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৫ হাজার ৯১৭ মেট্রিক টন আদা আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ আদা আমদানি হয়েছে ভিয়েতনাম থেকে। এসব আদা আমদানিতে কেজিতে খরচ পড়েছে ১০৪ থেকে ১৪১ টাকা। 

অন্যদিকে টেকনাফ স্থলবন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে ওই বন্দর দিয়ে ১৭ হাজার ৯৭৫ মেট্রিক টন আদা আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে গত মার্চ মাসে। ওই মাসে আদা আমদানি হয় ১০ হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন। এরপর এপ্রিল মাসে আমদানি হয় ৫ হাজার ৬১ মেট্রিক টন। সর্বশেষ মে মাসে আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৪৬৯ মেট্রিক টন আদা। এসব আদার আমদানিমূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতি মেট্রিক টন আদা ৯০০ ডলার থেকে ১ হাজার ৪০০ ডলারে আমদানি করা হয়েছে। নতুন তোলা আদা প্রতি টন ৯০০ ডলার থেকে ১ হাজার ডলারে আমদানি হয়। অন্যদিকে শুকনো আদা প্রতি টন ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ ডলারে আমদানি হয়। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আদার আমদানিমূল্য ৯৫ থেকে ১৪৯ টাকা।

খাতুনগঞ্জে ১০০ টাকার মধ্যে আমদানি করা আদার দামও ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। কম দামে আমদানি করার পরও কেন দাম বেড়েছে তা খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেছে, সরবরাহ-সংকটের কারণেই আদার দাম বেড়েছে।

আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও বেসরকারি এবি ব্যাংকের চুক্তি আছে। এই দুই ব্যাংকের দেওয়া ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করা হয়। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণে রমজানের ঈদের পর থেকে ব্যাংক ড্রাফট বন্ধ রাখে ব্যাংক দুটি। যে কারণে ওই সময় পণ্য আমদানি কমে যায়। যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে আগে ব্যাংক ড্রাফট করা ছিল, তারাই ওই সময় পণ্য আমদানি করতে পেরেছে। এই সময়ে ব্যাংক ড্রাফটের সংকটকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, যাদের কাছে ব্যাংক ড্রাফট করা ছিল তারা ব্যাংক ড্রাফটের ওপর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তি কমিশন নিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে গত ২৫ মে থেকে ব্যাংক ড্রাফট দেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা