× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অনিশ্চিত প্রকল্পে খরচ বাড়ছে ৫২৮ কোটি টাকা

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩ ১৩:৫৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

দেশের প্রথম ও একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ছাতক সিমেন্ট কারখানার বয়স প্রায় ৮৫ বছর। পুরোনো এই কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে ২০১৬ সালে ৬৬৭ কোটি টাকা অনুমোদিত খরচে আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়। তবে কাঁচামাল আমদানিতে রোপওয়ে স্থাপনে ভারতের অনুমোদন না পাওয়ায় দীর্ঘদিন থমকে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই সিমেন্ট কোম্পানির উন্নয়ন কাজ। এতে বিপাকে সিমেন্ট কারখানাটি। ঠিকাদারের অনিয়ম, কাজের ধীরগতিসহ বিভিন্ন কারণে এখনও কাটেনি প্রকল্পটির অনিশ্চয়তা।

এ প্রকল্প নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অস্বস্তিও রয়েছে। এমন অস্বস্তির মধ্যেই ডলারের দাম বাড়ার অজুহাতে ফের প্রকল্পটির ব্যয় ৫২৮ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৬৬৭ কোটি টাকা, পরে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এর ব্যয় বাড়িয়ে ৮৯০ কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু তাতেও প্রকল্পটির কাজ শেষ না হওয়ায় এখন দ্বিতীয় সংশোধনীতে ৫২৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ ব্যয় প্রথম সংশোধনীর তুলনায় ৫৯ শতাংশ বেশি।

ব্যয় বাড়ানোর কারণ হিসেবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) দাবি করেছে, প্রকল্পটির মূল কাজ ড্রাই প্রসেস ও সমন্বিত সিমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য সাধারণ ঠিকাদার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয় নানজিং সি-হোপ সিমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড চায়না। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যখন চুক্তি হয়, তখন ডলার রেট ছিল ৮৪ টাকা, কিন্তু এখন ডলার রেট বেড়ে ১০৬ টাকা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঠিকাদারকে চারটি বিল ৯৫ থেকে ১১০ টাকা প্রতি ডলার হিসেবে শোধ করা হয়েছে। এ ঠিকাদার তার চুক্তিমূল্যের ৪৩ শতাংশ ইতোমধ্যে পেয়েও গিয়েছে।

শুধু তাই নয়, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যখন চুক্তি হয়, তখন ডলারের রেট ছিল ৮১ টাকা ৭৫ পয়সা। ইতোমধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেও চুক্তিমূল্যের ২৯ শতাংশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা।

এ প্রকল্পের একটি বড় বাধা ছিল রোপওয়ে স্থাপনের জন্য ভারতের অনুমোদন পাওয়া। তবে সংশোধনী প্রস্তাবে তারা জানিয়েছে রোপওয়ে স্থাপনে ভারতীয় অংশের অনুমোদন পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন পেলে সে অনুযায়ী সাধারণ ঠিকাদারের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও করা হয়েছে।

মেয়াদ কেন বাড়ানো হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প শক্তি বিভাগের সদস্য ও সচিব আবদুল বাকি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, প্রকল্প দেরি হওয়ার কারণে সরকারের ৫২৮ কোটি টাকা অর্থ গচ্চা যাচ্ছে। ডলারের দাম বাড়া ও বিভিন্ন খাতে ব্যয় বাড়ায় এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা হয়েছে। এতে প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন খোদ শিল্প প্রতিমন্ত্রী। ছাতক সিমেন্টের প্রকল্পটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ঠিকাদার চুক্তি অনুযায়ী মালামাল ও মেশিনারিজ সরবরাহ করেনি। আবার যে মালামাল সরবরাহ করেছে তা খুবই নিম্নমানের। ঠিকাদারের বিল পরিশোধের আগে এ বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যেসব খাতে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে : আপ্যায়ন খাতে ৬৬ লাখ, নিরাপত্তায় ৩৮ লাখ, সম্মানী বাবদ ৪৮ লাখ, অপ্রত্যাশিত ব্যয় ৪২ লাখ, অভ্যন্তরীণ ভ্রমণে ২২ লাখ, মনিহারি খাতে ১৭ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব খাতে ব্যয় বাড়ানোর যৌক্তিকতা কী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এ ছাড়া ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু অযৌক্তিক দাবিও তুলেছে বিসিআইসি। যেমন- লাইসেন্স ফি বাবদ ১৯ লাখ ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশন দাবি করেছে, লাইসেন্স ফি, নিবন্ধন ফি এবং টেস্টিং ফির প্রয়োজনীয়তা কী?

ব্যাংক চার্জ খাতে ১৭ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। ব্যাংক চার্জের কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বাস্তবায়নকারী সংস্থা।

শুধু তাই নয়, ১০ জনের নিরাপত্তার ব্যয় ৩৮ লাখ টাকা বাড়ানোর যৌক্তিকতারও কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বিসিআইসি। এ ছাড়া তিন মাসের কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশের জন্য ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। এ ব্যয় প্রাক্কলনের ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা