× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে সফলতা

আতিকুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১৭:২৬ পিএম

আপডেট : ২৮ মে ২০২৩ ১৬:১৫ পিএম

মালচিং পদ্ধতিতে  এবার সবজি চাষ করেছেন কৃষক আব্দুল আজিজ। 
প্রবা ফটো

মালচিং পদ্ধতিতে এবার সবজি চাষ করেছেন কৃষক আব্দুল আজিজ। প্রবা ফটো

পরিবেশবান্ধব ও লাভজনক একটি কৃষি প্রযুক্তি হচ্ছে মালচিং পদ্ধতি। তাই অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। দ্বিগুণ ফলন ও ভালো বাজারদরে সবজি বিক্রি করে ভাগ্য বদলেছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চারাভাঙ্গা এলাকার সবজি চাষিদের।

মালচিং মূলত চীন ও জাপানের বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেওয়া হয় তখন তাকে বলে মালচ আর এ পদ্ধতিকে বলে মালচিং। চাষে বাণিজ্য ও আধুনিকীকরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক মালচিংয়ের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

মালচিং পদ্ধতিতে সফলতা পেয়েছেন মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের চারাভাঙ্গা গ্রামের চাষিরা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি একজন প্রবাসী। সৌদি আরব গিয়ে সুবিধা করতে না পেরে দেশে ফিরে অল্প কিছু জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষ শুরু করেন। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে তেমন লাভবান হতে পারছিলেন না। পরামর্শের জন্য সরকারি ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কৃষি ইউনিটের কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান ও সহকৃষি কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমনÑ মালচিং পেপার, ফেরোমন ফাঁদ, রঙিন আঠালো ফাঁদ সম্পর্কে। কৃষিকাজের বিভিন্ন পরামর্শ নেন তিনি। একপর্যায়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে ওই এলাকায় নতুন করে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি হিসেবে চিচিঙ্গা চাষ শুরু করেন। এতে তিন মাসের মধ্যে ভালো ফলন হওয়ায় সবজি চাষে আরও আগ্রহ বাড়ে তার। পর্যায়ক্রমে তিনি ১৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শসা, ধুন্দল, করলা ও চিচিঙ্গা চাষ শুরু করেন। এক বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেন। কৃষক আব্দুল আজিজের চাষাবাদ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার অন্যান্য কৃষক মালচিং পেপার ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন শুরু করেছেন।

সরেজমিন গিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ সম্পর্কে জানা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে প্রথমে জমিতে পরিমিত রাসায়নিক ও জৈব সার দিয়ে সারি সারি বেড তৈরি করা হয়। পরে সারিবদ্ধ বেডগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। বেডে নির্দিষ্ট দূরত্বে পলিথিন ফুটো করে সবজির বীজ বা চারা রোপণ করতে হয়। চারা রোপণের পর শুধু দেখভাল করা ছাড়া তেমন কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। মালচিং পেপার দ্বারা ঢেকে দেওয়ার কারণে ছত্রাক বা রোগবালাইয়ের আক্রমণ হয় না বললেই চলে। জমির পরিচর্যার জন্য তেমন শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না। ফলে উৎপাদন খরচ হয় খুব কম। এই পদ্ধতিতে ফলন হয় দ্বিগুণ। পরিশ্রম কম হয়। এ পদ্ধতি অনেক সহজলভ্য, লাভজনক ও পরিবেশবান্ধব।

সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য সমন্বিত কৃষি ইউনিটের (পিকেএসএফ) মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকি। যাতে উদ্যোক্তারাও স্বাবলম্বী হতে পারেন। অন্যদিকে, ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ সবজি পৌঁছায়। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রাসরণ কর্মকর্তা সুরাইয়া নিশাত জানান, সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কার্যক্রম সম্পূর্কে আমরা অবগত। এ বছর উপজেলায় ১২৫ হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা চাষ হয়েছে। কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কৃষকদের আমরাও প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি।’

এ ছাড়া কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বর্তমানে বাংলাদেশেও পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে বিভিন্ন স্থানে এ পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে কৃষিপ্রধান জেলা ও উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজির ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় উৎসাহিত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। বর্তমানে উৎপাদিত সব সবজিতেই ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক, যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়তই উদ্ভাবন করছে পরিবেশবান্ধব নানা প্রযুক্তি ও পদ্ধতি। সেই পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির মধ্যে একটি মালচিং পদ্ধতি।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা