× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

তিন বছরেও হয়নি পরামর্শক নিয়োগ

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ০৮:৪২ এএম

আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১২:২৯ পিএম

তিন বছরেও হয়নি পরামর্শক নিয়োগ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সম্ভবত সমীক্ষা, সীমান্তবর্তী স্থলবন্দর ও সংযোগ সড়কগুলোর উন্নয়নের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ডিজাইন করার জন্য ২২৫ কোটি টাকা খরচে একটি প্রকল্প নেয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। ২০২০ সালে নেওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ৩ বছর। অথচ নির্ধারিত মেয়াদ শেষ পর্যায়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের মূল কাজ তিন ধরনের পরামর্শক নিয়োগ শুরুই করতে পারিনি বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তবে মে মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ দুই বছর ১১ মাস শেষে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে এই প্রকল্পের পরিদর্শন প্রতিবেদন দেয় আইএমইডি। সেই প্রতিবেদন বলা হয়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খরচ করা হয়েছে ৩ কোটি ৭৬ হাজার টাকা। ২ বছর ৮ মাস শেষে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। প্রকল্পে এমন বাস্তবায়ন অগ্রগতিকে হতাশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে কিছু সুপারিশ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সংশ্লিষ্টদের দায় দায়িত্ব নিরুপণ করার সুপারিশ করে আইএমইডি।

এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মোহম্মদ সাব্বির হাসান খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এই প্রকল্পের মূল কাজই হচ্ছে পরামর্শক নিয়োগ। নানা কারণে প্রকল্পটি দেরি হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ছিল ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিজাইন করা। যা প্রকল্পে থাকলেও এডিবির ঋনে ছিল না। এটা অ্যাড করতে অনেক সময় লেগেছে। এছাড়া করোনার কারণে দেরি হয়েছে। আর দুইটা প্যাকেজের ইন্টারনাল থোক রিঅ্যারেজমেন্ট সেটাও এডিপির পরামর্শ করা হয়েছে।তবে এখন পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। বর্ধিত সময়ের মধ্যে পরামর্শক নিয়োগসহ বাকি কাজগুলো শেষ করা সম্ভব হবে। কারণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিটেইল্ড ডিজাইন তৈরীর জন্য পরামর্শক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোই সময়মতো হয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরণের প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ার পেছনে দায়ী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়া এবং মেয়াদ বাড়ানোর কারণে সরকারের কাঙ্খিত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয়।

গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের ধীরগতির বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এটা সারাদেশের সমস্যা। যথাযথা পরিকল্পনা অভাবেই মূলত এমন সমস্যা হয়েছে। আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনের মতো এমন  গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প সঠিক সময়ে হলো না। এটার জন্য মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দায়ি। মন্ত্রণালয় যদি ঠিকঠাক মতো চাপ না দেয় তাহলে প্রকল্পের কাজ দ্রুত হবে না।’ 

তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিদেশী অর্থায়নের প্রকল্প সেকারণে এটা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। এটা দ্রুত করে ফেলা দরকার।’

জানা গেছে, ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেক্টিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি (আরটিসিআইপিপিএফ)’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। যার মধ্যে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দিচ্ছে ১৪৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বাকি ৭৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা সরকারের অর্থায়ন।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর । প্রকল্পটি ২০২০ সালে একনক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয় । বাস্তবায়ন কাল নির্ধারণ করা হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রকল্পের কাজ নির্ধাারিত মেয়াদে শেষ হবে না জেনেই ২ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করে সংস্থাটি। বাস্তবায়নকারী সংস্থার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব চলতি মাসে অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। তবে আইএমইডির সুপারিশ প্রতিপালন করার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। 

মেয়াদ বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের ধীনগতির কারণ হিসেবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, শুরুতেই করোনার ধাক্কায় প্রকল্পের কার্যক্রমে ব্যহত হয়। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যে ডিজাইনটা লাগবে সেটা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ধরা থাকলেও এডিবির লোন সুবিধার মধ্যে ছিল না। পরবর্তীতে লোন নেগোসিয়েশনের সময় আলোচনা সাপেক্ষে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটার জন্যই বছর খানিক সময় লেগে যায়। মূলত এই দুই কারণে প্রকল্পে কাঙ্খিত অগ্রগতি হয়নি।

আইএমইডির প্রতিবেদনে এই প্রকল্পে কয়েকটি অডিট আপত্তির বিষয়ে উঠে এসেছে।  যেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে আইএমইডিকে জানাতে বলা হয়। এছাড়া পরিদর্শনকালীন সময় পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ১০টি পিআইসি ও ১০টি পিএসসি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ১টি পিআইসি সভা ও ১টি পিএসসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা পরিকল্পনা শৃঙ্খলার ব্যত্যয় মর্মে প্রতীয়মান।

এসব বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির জবাব প্রস্তুত করা হচ্ছে ।  পিআইসি ও পিএসসি সভার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন থেকে ঠিকমতোই সভা অনুষ্ঠিত হবে। 

সড়ক ও মহাসড়কের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের সড়ক সংযোগ সুবিধার উন্নয়ন, স্থল বন্দরসমূহের মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত সংযোগ সড়ক উন্নয়নের মাধ্যমে বহুমাত্রিক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন। তালিকাভুক্ত নির্ধারিত সড়কের ফিজিবিলিটি স্টাডি, ডিটেইল্ড ডিজাইন প্রস্তুত করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে , সড়কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন সংক্রান্ত ৩টি পরামর্শক সেবা, ২২ টি সড়ক, ৩টি আইসিটি বা আইসিডির সংযোগ সড়ক এবং লেভেল ক্রসিংয়ে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং প্রিলিমিনারী ডিজাইন। এছাড়া ভবিষ্যতে গৃহীতব্য প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত সড়কের ডিটেইল্ড ডিজাইন এবং ঢাকা-চট্টগ্রামের ২৩১ কিলোমিটার মহাসড়কের ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিটেইল্ড ডিজাইন তৈরী করা।

বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ১৫ শতাংশ এবং আর্থিক ব্যয় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা যা প্রকল্প ব্যয়ের ১.৩৪ শতাংশ । প্রকল্পের অধীনে ইতিমধ্যে তিনটি পরামর্শক নিয়োগ কার্যক্রম চলমান আছে। প্যাকেজ -১ এবং প্যাকেজ-৩ এর পরামর্শক নিয়োগ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা