× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিনামূল্যে ৬৫ হাজার পরিবারকে গবাদিপশু দেওয়ার উদ্যোগ

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৩ ১১:৩৫ এএম

আপডেট : ২৪ মে ২০২৩ ১১:৪৬ এএম

বিনামূল্যে ৬৫ হাজার পরিবারকে গবাদিপশু দেওয়ার উদ্যোগ

চরাঞ্চলে বিনামূল্যে গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাঁস-মুরগি বিতরণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তবে শুধু ঢাকা বিভাগের চরাঞ্চলের ৬৫ হাজার ২৯০টি পরিবারই পাবে এসব প্রাণিসম্পদ। পাশাপাশি বিনামূল্যে এসব প্রাণীর খাদ্য, ওষুধ এবং ভ্যাকসিনও দেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের মূল্যায়ন শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। একনেকে অনুমোদন পেলে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে ৩০৩ কোটি টাকার এ প্রকল্প। মূলত চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

প্রকল্পের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের ৩১টি উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষ এ প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এর মাধ্যমে এসব এলাকায় পশু পালনের মাধ্যমে নদীতীরবর্তী ৬৫ হাজার ২৯০টি দরিদ্র পরিবারের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন করা হবে। নদীর চর এলাকায় দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে এবং নদীতীরবর্তী এলাকায় ১০টি পশুসম্পদ প্যাকেজ গ্রহণ করা হবে।

প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এসব অঞ্চলের নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়বে। ওই এলাকার মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া কর্মসংস্থানের ফলে নারীর আয় বাড়বে এবং ক্ষমতায়ন ঘটবে। প্রকল্পটি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ব্যবসায়ী উদ্যোগ গ্রহণে অনুপ্রাণিত করবে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলাসহ পরিবেশের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে।

প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৩২ হাজার ৯০০ পরিবারকে ২৫টি করে মুরগি দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২৩টি মুরগি এবং দুটি মোরগ থাকবে। এ ছাড়া মুরগির ঘর, খাদ্য, ভ্যাকসিন ও ওষুধ দেওয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় ১৬ হাজার ৪৫০ পরিবারকে ২১টি করে হাঁস দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১৮টি হাঁসি এবং ৩টি হাঁসা থাকবে। হাঁসের সঙ্গে ঘর, খাদ্য, ভ্যাকসিন ও ওষুধ দেওয়া হবে।

৮ হাজার ২২০টি পরিবারকে দেওয়া হবে দুটি করে ছাগল। পাশাপাশি ছাগলের ঘর, খাদ্য, ভ্যাকসিন ও ওষুধ দেওয়া হবে। এক হাজার পরিবারকে দুটি করে পাঁঠা দেওয়া হবে। তাদের খাদ্য, বাসস্থান, ভ্যাকসিন ও ওষুধও থাকবে। ৪ হাজার ১১০টি পরিবারকে তিনটি করে ভেড়া দেওয়া হবে। এর মধ্যে দুটি ভেড়ি এবং একটি ভেড়া থাকবে। সঙ্গে ঘর, খাবার এবং ওষুধ দেওয়া হবে।

প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৬৫০ পরিবারকে একটি করে বকনা বাছুর দেওয়া হবে। এর সঙ্গে খাদ্য, ভ্যাকসিন এবং ওষুধও দেয়া হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৩৬০ পরিবারকে কবুতর ও কোয়েল পাখি দেওয়া হবে। এর সঙ্গে দেওয়া হবে বাসস্থান, ভ্যাকসিন ও ওষুধ। প্রকল্পের আওতায় ৩৬০টি ২০ শতাংশ জায়গায় ঘাসের প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হবে এবং ২৪০টি উন্নত জাতের ঘাস দ্বারা সাইলেজ তৈরি প্রদর্শনী করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় এক বছর বয়সি একেকটি বকনা বাছুর কেনা হবে ৯০ হাজার টাকায়। যদিও সমজাতীয় চলমান প্রকল্পে এই গরু কেনা হচ্ছে ৬১ হাজার টাকায়। একেকটি ভেড়া এবং ছাগল কেনা হবে ১১ হাজার ২০০ টাকায়। অন্য প্রকল্পে ছাগল কেনা হচ্ছে ৮ হাজার টাকায়। একেকটি মুরগি কেনা হবে ৪২০ টাকায়।

প্রকল্পে বেশি দামে গরু-ছাগল কেনার বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মলয় কুমার শূর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, গরু-ছাগলের দাম যাচাই-বাছাই করেই নির্ধারণ করা হয়েছে। এক বছর বয়সি গরু কেনা হবে। আবার এর সঙ্গে ভ্যাট-ট্যাক্সও আছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন ও মন্ত্রণালয় যৌক্তিক মনে করেই এ ব্যয় অনুমোদন দিয়েছে।

বিতরণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রকল্পটি চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করবে। পশুপাখি বিতরণের জন্য উপজেলায় ইউএনওর নেতৃত্বে কমিটি করে দেওয়া হবে। আমরা সুবিধাভোগীদের জন্য কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করেছি। বাছাইকারী সংস্থা সঠিকভাবে তালিকাটি যাচাই করবে। চর এলাকার বাইরের কাউকে সুবিধাভোগী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই।’

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, এসব এলাকায় গবাদি পশুপাখি পালনের জন্য সঠিক খামার ব্যবস্থাপনা, উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞান, উন্নত প্রযুক্তির সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হলে এটি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে বেকার সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে এলাকাবাসীর দারিদ্র্য বিমোচন ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। এ ছাড়া ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে পারিবারিক আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। এটি স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সৃষ্টি, নারীর আয় বৃদ্ধি এবং নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং পশুপাখি থেকে প্রাপ্ত বিষ্ঠা ও গোবর ফসলের ক্ষেতে সার হিসেবে এবং মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করার মাধ্যমে মূল্য সংযোগ করা সম্ভব হবে। তাই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা