ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৩ ১৩:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৪ মে ২০২৩ ১৩:২৭ পিএম
পোকার আক্রমণে সাদা হয়ে যাওয়া আধাপাকা ধান হাতে কৃষক দেবানন। প্রবা ফটো
ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে এ সময় উৎসব হওয়ার কথা থাকলেও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। বোরোক্ষেতে ব্লাস্ট আক্রমণ করায় জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ উপজেলার চাষিরা।
ব্লাস্টের কারণে সোনালি রঙের পরিবর্তে সাদা হয়ে যাচ্ছে ধানের শীষ। পোকার আক্রমণে দিন দিন ধানগাছের পাতা হলুদ বর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। নানা ধরনের কীটনাশক ছিটিয়েও প্রতিকার মেলেনি। এ ক্ষেত্রে কৃষি কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ এ অঞ্চলের চাষিদের।
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার সদর উপজেলায় চলতি বছর ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে ব্লাস্টের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
সালন্দর ইউনিয়নের কৃষক আজিজুল হক বলেন, আমার দুই একর জমির প্রায় এক একরে সাদা শীষ বের হয়েছে। এবার খরচ অনেক। সময়মতো বৃষ্টি হয়নি, সারের দামও বেশি ছিল। ধান যদি এভাবে নষ্ট হয়, তাহলে আমরা কৃষকরা অনেক লসে পড়ব। কৃষি কর্মকর্তাদের আমরা চিনি না। তারা কখনও মাঠপর্যায়ে আসেন না কোনো ফসল দেখতে।
সদরের পালপাড়া গ্রামের চিহারু পাল নামে এক কৃষক বলেন, ‘মুই ৪ একর জমিত ধান চাষ করিছু। সব ধান গেলা হাইব্রিড। কোনোবার মোর ধানত এত সমস্যা হয় নাই। এই বার যে কী হইল বুঝায় পাও না।’
চিলারং ইউনিয়নের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, ‘মুই তিন একর জমিত ধান লাগাইছু। ১০ দিন পর মুই ধান কাটিম। এই তিন-চার দিনে মোর ধানলাত এমনভাবে পোকা আক্রমণ করিছে, রাতারাতি মোর অনেক ধান খায় ফেলিছে।’
সদরের নারগুন ইউনিয়নের কৃষক সাদ্দাম হোসেন বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের অফিসে পাওয়া যায় না। ফোন দিলে ধরেন না। তারা যদি পোকা দমন হবে পরামর্শ দিতেন তাহলে এত ধান নষ্ট হতো না।
আকচা ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক তৈমুর রহমান বলেন, আমাদের ইউনিয়নে দুজন কৃষি অফিসার আছেন, তারা কেমন দেখতে ৬-৭ বছর হয়ে গেল দেখলাম না। অফিসে গেলে তো সব সময় তালা বন্ধ দেখতে পাই।
এ বিষয়ে আকচা ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা সোমা বলেন, আমি অফিসে থাকি। কোনো কৃষক আসেন না আমার কাছে। তারা যদি আসেন, তবে আমি তাদের সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করব।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল আজিজ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ধানের ক্ষেতে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ, ধানের গোড়া পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এগুলো ধানের ছত্রাকজনিত রোগ। আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। এবার ফলন ভালো হয়েছে। পোকার আক্রমণে তেমন ক্ষতি করতে পারবে না।