প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৩ ১৪:৩৮ পিএম
আপডেট : ২২ মে ২০২৩ ১৬:১১ পিএম
ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় আয়োজিত অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলন। প্রবা ফটো
শুধু বাণিজ্যিক ব্যাংকের পক্ষে দেশের ঋণ খেলাপি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার বাংলাদেশ (এবিবি)।
সংগঠনটি মনে করে, এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ঋণ গ্রহিতা, ব্যাংক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় ব্যাংকারদের কিছু করার থাকে না। যেমন শক্তিশালী কিছু বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তা ঋণ নিয়ে খেলাপি হলে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতার কারণে সেই টাকা আদায় করতে পারে না ব্যাংক। তাই দেশের স্বার্থেই সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
সোমবার (২২ মে) ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় আয়োজিত অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায় সংগঠনটি।
এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসাইন বলেন, ‘অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত। তাদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতি সংশোধনের মাধ্যমে আমদানিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ফলে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার অবৈধ লেনদেন বন্ধ হয়েছে।
রেমিট্যান্স নিয়ে তিনি বলেন, ‘ডলারের শুধু দাম নির্ধারণ করলেই হবে না, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাও দেখতে। প্রবাসীরা এয়ারপোর্টে ভালো সুবিধা পান না। তাদের কোনো ধরনের কাজ সম্পর্কে শেখানো হয় না। অন্যান্য দেশে বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং দেওয়া হয়, দক্ষ করা হয়, যা আমাদের দেওয়া হয় না। এতে প্রবাসীরা অনেক পিছিয়ে পড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, আগামী জুলাই থেকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার বিশেষত ডলারের একক দামে বেচাকেনা শুরু হবে। এটি বাজারের ওপরে ছেড়ে দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুদহার বাজারভিত্তিক হওয়া কতটুকু প্রয়োজন তা নিয়ে চিন্তা করা উচিত। বেঁধে দেওয়া সুদহার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে। আসছে মুদ্রানীতিতে যদি সুদহারের ক্যাপ তুলে দেওয়া হয় তবুও সেটা বাজারভিত্তিক হবে না। তবে এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই ধরে নেওয়া হবে।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এখনও এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। ছোট ছোট এলসিগুলো খুলতে পরছি না। আমাদের কাছে ১০টি এলে হয়তো চারটি এলসি খুলতে পারছি। তবে আমাদের ভালো দিক হলো এক্সপোর্ট বাড়ছে, রেমিট্যান্স বাড়ছে। করোনার পর ইউক্রেন-রাশিয়া পরিস্থিতিতেও অর্থনৈতিক মন্দায় কাটিয়ে উঠতে শুরু করছে ব্যাংক খাত। এখন আমানত বাড়ছে কিন্তু সে তুলনায় ঋণ বিতরণ কমেছে। এখন অতিরিক্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা তারল্য রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে জরুরি পণ্যের এলসি খোলাই এখন গুরুত্ব পাচ্ছে। আমাদের আগে খেলনা আমদানির প্রয়োজন নেই। কারণ আমাদের সার দরকার, তেল দরকার। আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি গ্রাহকের আস্থা বেড়েছে। রেমিট্যান্সে ডলারের রেট ৮৭ টাকা থেকে ১০৮ টাকা হয়েছে। আমাদের সাময়িক তারল্য সংকট দেখা দিয়েছিল। তবে এখন অতিরিক্ত তরল্য রয়েছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী।