× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গোপালগঞ্জে পরীক্ষামূলক আবাদ

ব্রি-১০২ ধানে শতাংশপ্রতি ফলন ১ মণ

গোপালগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩ ১৬:১২ পিএম

আপডেট : ২১ মে ২০২৩ ১৪:১০ পিএম

টুঙ্গিপাড়ার একটি প্রদর্শনী প্লটে চাষ করা ব্রি-১০২ জাতের ধান। প্রবা ফটো

টুঙ্গিপাড়ার একটি প্রদর্শনী প্লটে চাষ করা ব্রি-১০২ জাতের ধান। প্রবা ফটো

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত পুষ্টিসমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল ব্রি-১০২ জাতের ধানের পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য মিলেছে। গোপালগঞ্জে এই জাতের চাষে প্রতি শতাংশে গড়ে ১ মণ ফলন দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুষ্টিসমৃদ্ধ এ ধান উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জের পাঁচটি প্রদর্শনী প্লটে এই জাতের ধান হেক্টরে ৮ দশমিক ১০ থেকে ৯ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত ফলন হয়েছে। সেই হিসাবে শতাংশে ফলন হয়েছে প্রায় ১ মণ বা তারও বেশি। ব্রি-২৯-এর বিকল্প হিসেবে এ ধানের আবাদ করা যায়। নতুন এই জাতের ধানে রোগবালাই নেই। লম্বা, চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু। স্বল্প খরচে ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হয়েছেন।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ’২০২২ সালে বীজ বোর্ড এই বীজধান ছাড় করে। এই বছর বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জের পাঁচটি প্রদর্শনী প্লটে প্রথমবারের মতো এই ধানের আবাদ করেন কৃষক। চিকন ধানের জাতের মধ্যে এই জাতই সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। চিকন ধানে এটি নতুন আশা জাগিয়েছে। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়। এটি আমাদের কৃষি ও কৃষকের জন্য সুসংবাদ। এই জাতের ধান এসডিজি অর্জনে সহায়তা করবে। এই ধানের চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ ধানে আরও বেশি সমৃদ্ধ হবে। কৃষকের আয় বড়িয়ে দেবে এই জাতের ধান।’

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, ’বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত একটি ক্লাইমেট স্মার্ট জাত ব্রি-১০২। বোরো মৌসুমের এই ধান জিংকসমৃদ্ধ। কারণ মাছে-ভাতে বাঙালির ধানেই সমৃদ্ধি। এই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে ব্রি -১০২। এটি আমাদের প্রত্যাশা।’

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মুহিব শেখ (৫০) বলেন, ’লম্বা ও চিকন জাতের ব্রি ধান-১০২ আমার প্রদর্শনী প্লটে সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে। আমি জীবনে চিকন ধানে এত বেশি ফলন দেখিনি। এই ধানে রোগবালাই নেই বললেই চলে। আমার জমিতে শুধু ধান ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়নি। এমন ধান সবাইকে মুগ্ধ করেছে। অনেক কৃষকই এই ধান দেখে ভবিষ্যতে চাষাবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা আমার কাছে এই ধানের বীজ চেয়েছেন। এই ধান লম্বা ও চিকন। বাজারে মোটা ধানের তুলনায় মণে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা দাম বেশি পাওয়া যাবে। অধিক ফলন পেয়ে আমরা লাভবান হতে পারব। এই ধান আমাদের জন্য নতুন দিশা হয়ে এসেছে।’

ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের জনসংখ্যার সঙ্গে ২০-২২ লাখ লোক যোগ হচ্ছে। ১৭ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে খাবারের নিশ্চয়তা দিতে হলে অবশ্যই ব্রি উদ্ভাবিত নতুন জাতের উফশী ধানগুলো চাষ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। নতুন জাতগুলোর ফলন আগের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯-এর চেয়ে অনেক বেশি। এগুলো যদি ভালো পরিচর্যা করা যায়, তাহলে আরও বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।’  

তিনি আরও বলেন, ’কাজেই এখন পুরোনো জাত বাদ দিয়ে নতুন জাতের ধান ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০ ও ব্রি-১০২ চাষ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু-১০০ ও ব্রি-১০২; চিকন, উচ্চ জিংকসমৃদ্ধ, জিরা টাইপের, যা আমাদের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে। এগুলো প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান হওয়ায় বাজারমূল্যও অন্য ধানের তুলনায় বেশি।’

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল কাদের সরদার বলেন, ’বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত। কিন্তু এখনও দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের পাশাপাশি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ’বাংলাদেশর মানুষ ভাত খেতে অভ্যস্ত। তাই ভাতের মধ্যে পুষ্টিগুণ থাকলে সহজেই মানুষ পুষ্টি পাবে। ব্রি উদ্ভাবিত জিংকসমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু-১০০ ও ব্রি-১০২ জাতের ধানের চাষাবাদ আমরা সম্প্রসারণ করব। এতে একদিকে যেমন কৃষক অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হবেন, তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে। এই ধান উদ্ভাবনে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা