প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩ ১৪:৩১ পিএম
আপডেট : ১৯ মে ২০২৩ ১৪:৪৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ঋণসংকটের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ছয়টি দেশ। কোভিড সংকট মোকাবিলায় দেশগুলোতে সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
গত বৃহস্পতিবার সংস্থটির রাইজিং পাসিফিকা শিরোনামের এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কিরিবাতি, রিপাবলিক অব মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, ফেডারেটেড স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়া, সামোয়া, টোঙ্গা এবং টুভালুতে অভ্যন্তরীণ ঋণের সংকট রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে প্রবেশের জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নেই।
এ ছাড়া এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভানুয়াতু মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে পালাউ এবং নাউরুর ঋণ টেকসই মাত্রার মধ্যে রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তবে এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলের সরকারি ঋণ স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে ৯টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় পিআইসি-৯ দেশের ভৌগোলিক অর্থনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থা অস্থিরতার মধ্যে থাকায় ঋণসংকটের ঝুঁকি বেড়েছে।
২০১৯ সাল থেকে এ অঞ্চলে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। কোভিডের কারণে পর্যটননির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সীমান্ত বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়াও লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ এবং আবহাওয়ার কারণেও বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
এদিকে বিশ্বব্যাংক গত মাসে বলেছিল, ফিজিকেও তার ঋণের বোঝা কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়ে পাপুয়া নিউগিনি ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন এনডেগওয়া বলেন, ঋণ দেওয়ার পরিমাণ কমানো, রাজস্ব আদায় ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ বিশ্লেষণ থাকতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনা-পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার জন্য অনুদানের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও সুপারিশ করা হয়, দক্ষতার সঙ্গে ব্যয় এবং কর সংগ্রহের বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়াও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে সামাজিক সহায়তা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আরও বেশি বরাদ্দের ব্যবস্থা করা উচিত।
আর্থিক সংকটে থাকা দেশগুলোর বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ‘এই বিনিয়োগগুলো দারিদ্র্য এবং বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয় বা বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।’
এদিকে ব্যাংকঋণের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে এখনও কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটি যদি এভাবেই সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখে, তাহলে ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদনকেও (জিডিপি) হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জেরোম হান্ট। গত শনিবার জাপানে উন্নত সাতটি দেশের সংগঠন জি৭-এর আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এবারের আলোচনায় জি-৭ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা ব্যাংক খাতের টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, বিশ্ব অর্থনীতিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবসহ সমসাময়িক চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করেন।
এ সময় হান্ট বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্থবিরতা প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
ঋণসংকটে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি থমকে দাঁড়াবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এটা একেবারে ধ্বংসাত্মক হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতির একটি অন্যতম বড় চালিকাশক্তি। যদি তারা চুক্তিতে পৌঁছতে না পারে, তাহলে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি থমকে দাঁড়াবে।
তবে বাইডেন এবং কংগ্রেস তাদের মতপার্থক্যগুলো সমাধান করতে সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন হান্ট। সূত্র : রয়টার্স