× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৯ দিন পর বন্ধ হয়ে যেতে পারে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৩ ২২:২৫ পিএম

আপডেট : ১৯ মে ২০২৩ ১৬:১১ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

আগামী ২৭ মে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র এটি। ডলার সংকটে চীনা কোম্পানি সিএমসির দেনা পরিশোধ করতে না পারায় জ্বালানি সংকটে পড়তে যাচ্ছে কেন্দ্রটি। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জরুরি বৈঠকে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রটিতে আর মাত্র ৯ দিনের জ্বালানি মজুদ রয়েছে। এতে তাপমাত্রা বাড়লে ঢাকার লোডশেডিং সামাল দেওয়া কঠিন হবে। অন্যদিকে স্বল্প মেয়াদি চুক্তির জালে আটকা পড়েছে রামপাল।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, গত এপ্রিল পর্যন্ত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৩৫৪ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সব মিলিয়ে ৩০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। গতকাল দিয়েছে ১০ মিলিয়ন ডলার এবং এর আগে ২০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এর বাইরে চলতি মাসের মধ্যে আরও ৭০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করলে সিএমসিকে আবার কয়লার এলসি খোলার জন্য অনুরোধ করা হবে। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক এই সময়ে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে এই অর্থ পরিশোধ করবে।

বৈঠকে বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান ছাড়াও পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানির (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, কেন্দ্রটি এখন বেশিরভাগ সময়ে ফুল লোডে চলে। অর্থাৎ গ্রিডে ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এতে দৈনিক তাদের ১৩ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়। এখন কেন্দ্রটিতে ১ লাখ ২০ হাজার টনের মতো কয়লা মজুদ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সময়মতো ডলার না দেওয়ায় কেন্দ্রটির অর্ধেক মালিকানায় থাকা চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি সিএমসি গত এপ্রিল মাসে কোনো কয়লা আমদানির ঋণপত্র খোলেনি। ফলে এখন নতুন করে ঋণপত্র খুললে দেশে কয়লা আসতে ২৫ দিন সময় প্রয়োজন হবে।

সূত্র বলছে, তাপমাত্রা বাড়লে ঢাকায় ৭০০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে ৪০০ এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানিতে (ডেসকো) ৩০০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং করে। পিক আওয়ারে ঢাকার চাহিদা দুই বিতরণ কোম্পানির কাছে তিন হাজার মেগাওয়াটের মতো। এর মধ্যে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পায়রা বন্ধ হলে ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ের সঙ্গে আরও ৮০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ সংকটে পড়বে ঢাকা। তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র বলছে, এখন কেন্দ্রের প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ পড়ছে ৯ টাকা। দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের পরই সবচেয়ে কম খরচের বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে কেন্দ্রটি। কেন্দ্রটিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি খরচ হচ্ছে ৫ দশমিক ৫০ টাকা। 

কেন্দ্রটির একজন কর্মকর্তা জানান, যখন বিশ্ববাজারে কয়লার দাম বেশি ছিল তখন কেন্দ্রটি চালিয়ে রাখতে হয়েছে। এখন যখন বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম কমেছে তখন ডলার সংকটে কেন্দ্রটি চালানো যাচ্ছে না।

সূত্র আরও জানায়, ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কিন্তু শুরু থেকেই কেন্দ্রটির কয়লা আমদানিতে বাংলাদেশের এলসি নিতে অস্বীকৃতি জানায় ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তখন চীন থেকে সিএমসি ঋণপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। একই সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে ছয় মাসের ডেফার্ড পেমেন্ট (বিলম্বিত পরিশোধ) সুবিধায় কয়লার দর পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। সেই হিসাবে এখনকার বকেয়াটি হচ্ছে গত বছর অক্টোবর মাস পর্যন্ত কয়লার দাম। 

অন্যদিকে স্বল্পমেয়াদি চুক্তির জালে আটকে গেছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সূত্রগুলো বলছে, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি থাকলে কবে, কোন জাহাজ আসবে তার একটি হিসাব থাকে। সেই অনুযায়ী কেন্দ্র পরিচালনা করা হয়। কিন্তু স্বল্পমেয়াদি চুক্তিতে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ পাওয়া কঠিন হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরবরাহকারী গত ২ মে কয়লা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সরবরাহকারীর কাছ থেকে কয়লা পেয়ে কেন্দ্র চালু করতে ১৮ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। এই ক’দিন কেন্দ্র না চালানোর আর্থিক ক্ষতির অঙ্ক হিসাব করা হচ্ছে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২৩ দিন আগে জ্বালানিসংকটে বন্ধ হয়ে যায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা