× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চ্যালেঞ্জের মুখে পর্যটন খাত

জাহিদুল ইসলাম

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৩ ১১:১১ এএম

আপডেট : ১৮ মে ২০২৩ ১৩:৩৪ পিএম

চ্যালেঞ্জের মুখে পর্যটন খাত

দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে হোটেল নির্মাণে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় উপকরণ আমদানিতে বড় ধরনের শুল্ক ছাড় দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআর এ সুবিধা তুলে নিচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এতে পর্যটন খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে এ খাতে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। 

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এনবিআরের জারিকৃত এসআরওর মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত বিলাসবহুল ও মানসম্পন্ন আবাসিক হোটেল নির্মাণের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রায় ১০ বছর তারা এ সুবিধা পেয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন এইচএস কোডের অধীনে বিভিন্ন আমদানি উপকরণের ওপর আগের মতো ১১০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে এনবিআর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, পর্যটন খাতের বিকাশের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন হোটেল নির্মাণে ববহৃত উপকরণ আমদানিতে ছাড় ছিল। তবে বর্তমানে সরকার মনে করছে এ খাত যথেষ্ট বিকশিত হয়েছে। সরকারি নীতি-সহায়তা ছাড়াই তারা এগিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গেছে। দীর্ঘমেয়াদে কোনো খাতে ছাড় অব্যাহত রাখলে তারা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পরিবর্তে মুখাপেক্ষী হয়ে যায়। তখন তারা প্রতিনিয়ত আরও সুবিধা পেতে চায়। অন্যদিকে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এতে এ খাতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন তিনি।

এর আগে এনবিআরের এক আদেশে আবাসিক হোটেল নির্মাণে ব্যবহৃত আমদানি করা সুনির্দিষ্ট পণ্যে শুল্ক রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। হোটেলের ভেতরে সাজসজ্জা বা ইনটেরিয়র ডেকোরেশন থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, লাইটিং, ইলেকট্রনিক্সসহ অন্তত ৪০টি উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, পর্যটন খাত অবকাঠামো নির্মাণের দিকে অনেক এগিয়ে গেছে। নীতি-সহায়তা পেয়েই তারা আজকের অবস্থানে এসেছে। এখন তারা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে। বিভিন্ন খাতে রেয়াতি সুবিধা ছাড় উঠিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ রয়েছে। আইএমএফের কথা বাদ দিলেও সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এনবিআর অনেক যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে সবাই টিকে থাকতে পারে এবং এনবিআর রাজস্ব আদায় করতে পারে। কোনো খাতে দীর্ঘদিন ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, আমরা নানা ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দেশের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তাতে অনেকটুকু এগিয়েছি, আরও অনেক এগিয়ে যাওয়ার বাকি। যদিও বিষয়টি আমি জানি না, তবে মানসম্মত হোটেল নির্মাণে প্রয়োজনীয় উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ছাড় উঠিয়ে দিলে এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নির্মাণসামগ্রীর দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি, ডলারের দামও ঊর্ধ্বমুখী। সেক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে এ খাত বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হবে। এমন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে আরও বিবেচনার প্রত্যাশা করেন তিনি।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্যসূত্রে জানা গেছে, দেশে ২০১৭ সালে বিদেশি নাগরিক আগমন করেছেন ৫ লাখ ৬৬৫ জন। এ ছাড়া ২০১৮ সালে বিদেশি নাগরিক এসেছেন ৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ জন। ২০১৯ সালে বিগত ১০ বছরে সর্বোচ্চ ৬ লাখ ২১ হাজার ১৩১ জন বিদেশি নাগরিক এসেছেন। করোনা মহামারির সময় ২০২০ সাল নাগাদ বিদেশি এসেছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ জন। ২০২১ সালে বিদেশি নাগরিক এসেছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৬ জন। সর্বশেষ ২০২২ সালের তথ্য সংস্থাটি এখনও হালনাগাদ করতে পারেনি।

জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এনবিআর যে রেয়াতি সুবিধা দিয়েছে, সেটা চিন্তা করেই এ খাতটা গড়ে উঠেছে। বর্তমানে যদি এনবিআর এ রেয়াতি সুবিধা তুলে দেয়, তাহলে অবশ্যই এ খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।’

তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, অনেক খাতেই কর সুবিধা বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। মানসম্মত হোটেল বিলাসিতার মধ্যেই পড়ে। তবে এতে খুব বেশি রাজস্ব আদায় হবে বলে মনে করেন না তিনি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বিন্দু বিন্দু করেই সাগর হয়, এজন্যই হয়তো এনবিআর এ সুবিধা বন্ধ করছে। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ঠিক কত রাজস্ব আদায় হবে, তা আমরা জানি না। তবে নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক বলা যায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা