প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৩ ১৮:৫০ পিএম
আপডেট : ১৬ মে ২০২৩ ১৯:০২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ঋণের পরিমাণ না বাড়িয়ে আগামী ১ জুন পর্যন্ত সরকারের সমস্ত বিল পরিশোধ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ। তবে আগামী মাসের শুরু থেকে সরকারকে অর্থ প্রদানের সক্ষমতা থাকবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ফলে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানোর বিষয়টি জরুরি হয়ে উঠেছে জানিয়ে কংগ্রেসকে এক চিঠিতে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যাবতীয় অর্থনৈতিক কার্যকলাপ স্বাভাবিক রাখতে ব্যাংকঋণের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাপ বাড়ছে কংগ্রেসনাল রিপাবলিকান ও হোয়াইট হাউসের ওপর। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে আবারও কংগ্রেসকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সচিব জ্যানেট ইয়েলেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘জুনের প্রথম দিকে অর্থ বিভাগ সরকারের সমস্ত অর্থপ্রদানের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে পারবে না। যা প্রথমবারের মতো দেশটিকে খেলাপি হওয়ার দিকে এগিয়ে নেবে। ফলে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ১ জুনের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে নির্ধারণ করতে হবে।’
জাপানে অনুষ্ঠিত উন্নত সাতটি দেশের সংগঠন জি-৭-এর বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে আগামী বুধবার দেশ ছাড়বেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় একটি সফরে প্রায় এক সপ্তাহ সময় নেবেন তিনি। তবে বিদেশ সফরে যাওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট বৈঠকের জন্য হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে দেখা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ম্যাকার্থি গতকাল সোমবার বলেছেন, সপ্তাহান্তে কর্মকর্তা পর্যায়ের আলোচনাতেও ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অগ্রগতি হয়নি।
এদিকে মে মাসের শুরুতে অর্থ সচিব জ্যানেট ইয়েলেন এক চিঠিতে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘কয়েক দিন বা কয়েক মাসের মধ্যেই একটি খারাপ সময় আসতে যাচ্ছে।’ তবে আগামী সপ্তাহে কংগ্রেসের আলোচনার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জরুরি ভিত্তিতে ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে বারবার সতর্ক করে আসছেন ইয়েলেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ঋণের সীমা বাড়াতে ব্যর্থ হয়, তাহলে একটি সংকট সৃষ্টি হতে পারে। যা যুক্তরাষ্ট্র ও বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস গত সপ্তাহে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র জুনের প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বৃদ্ধি না করলে অর্থপ্রদানের বাধ্যবাধকতাগুলো দেশটিকে খেলাপি হতে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। এমনকি দেশটিতে মে মাসজুড়ে অর্থপ্রদান কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসসহ কিছু বিশ্লেষক পরামর্শ দিয়েছেন, ট্রেজারি বিভাগ যদি ১৫ জুন পর্যন্ত ত্রৈমাসিক ট্যাক্স পেমেন্ট এবং ৩০ জুন পর্যন্ত নতুনভাবে ব্যাংকঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে খেলাপি হওয়া রেখেই আগস্ট পর্যন্ত অর্থনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে নিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
ইয়েলেন সোমবারের চিঠিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সেখানে বলেন, ‘আমরা অতীতের ঋণের সীমাবদ্ধতা থেকে শিখেছি—ঋণের সীমা স্থগিত বা বাড়ানোর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা ব্যবসা এবং ভোক্তাদের আস্থা নষ্ট করতে পারে। করদাতাদের জন্য স্বল্পমেয়াদি ঋণের খরচ বাড়াতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিংকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
ইতোমধ্যেই আর্থিক খাতের খরচ বেড়েছে উল্লেখ করে ইয়েলেন আরও বলেন, ‘জুনের শুরুতেই সামাজিক নিরাপত্তা খাতের তহবিলের মেয়াদ পূর্ণ হবে। ফলে ইতোমধ্যেই আমাদের খরচ যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কংগ্রেস যদি ঋণের সীমা বাড়াতে ব্যর্থ হয়, তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারগুলোর জন্য কষ্টের কারণ হবে। এমনকি বিশ্ব নেতৃত্বের ব্যাপারেও আমাদের অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ ছাড়াও আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উত্থাপন হবে।’
সূত্র : রয়টার্স