প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৩ ১৮:০৭ পিএম
আপডেট : ০৮ মে ২০২৩ ১৪:১৮ পিএম
বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকরা। প্রবা ফটো
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই। মাঠে মাঠে দেখা যাচ্ছে কৃষকের ব্যস্ততা। এবার বোরো ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ধানে-দামে কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাই চাষাবাদও হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ১৭ টন।
উপজেলার মহদিপুর গ্রামের কৃষক সাগর চন্দ্র রায় বলেন, ‘৩৩ শতাংশ মাপের এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ওই জমিতে সেচ, সার, বীজ, আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানি, চাষ, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ খরচ হয়েছে ১৫-১৬ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান হয়েছে প্রায় ২৬ মণ। যা ৩১ থেকে ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। তবে ২৮ ও ২৯ জাতের ধান পুরোপুরি কাটা ও মাড়াই করতে অন্তত আরও সপ্তাহ খানেক সময় লেগে যাবে।’
শাহাপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব বলেন, দেড় বিঘা জমিতে চিকন জাতের ধান যে পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও আশানুরূপ লাভ পাওয়া যাবে। ধান চাষের সময় নেওয়া ঋণ দেনা শোধ করেও লাভ খাতায় কিছু থাকবে। সরকার যদি কৃষকদের জন্য একটু দাম আরও বাড়িয়ে দেয় ও কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনেন তাহলে ভালো হতো।
রাজারামপুর গ্রামের কৃষক বিপুল চৌধুরী বলেন, ২৮ ও ২৯ জাতের ধান উঠতে আরও অন্তত এক সপ্তাহ লেগে যাবে। তবে বর্তমানে মিনিকেট ধানের যে দাম তাতে কৃষকরা আশানুরূপ লাভ পাচ্ছেন। এতে এ দাম বজায় থাকলে কোনো কৃষককেই আর্থিকভাবে লোকসানে পড়তে হবে না।
অন্যের ২৫ শতাংশ জমিতে মিনিকেট ধান চাষ করেছেন বর্গাচাষি উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সুবাস চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, নিজেরাই সব কাজ করেছি। এরপরও খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। উৎপাদিত ধান থেকে মহাজনকে দিতে হবে ৬ মণ ধান। বাকি ধান বিক্রি করে তিনি পাবেন ১৮-২০ হাজার টাকা। তবে ক্ষেতের অন্য জাতের ধানের কাটাই মাড়াই এখনও শুরু করা যায়নি।
ফুলবাড়ী চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, অনেক কৃষকই ধান না শুকিয়েই বিক্রি করেন। যে কারণে তারা দাম কম পান। শুকনো ধান বিক্রি করলে ভালো দাম পাবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ ও রোগ বালাই না হওয়ায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদেরকে সার্বিকভাবে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।