প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৪৪ পিএম
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৪৬ পিএম
ফল গাছগুলো নেটে মুড়িয়ে দিচ্ছেন এক কর্মী । ছবি সংগৃহীত
বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে বাড়ছে ফলের চাহিদা। বিশাল এই চাহিদা পূরণে ফলন বাড়াতে চেষ্টা করছেন ফল চাষিরা। এরই ধারাবাহিকতায় গাছে নেট বা মশারি ব্যবহারে ঝুঁকছেন তারা। এই পদ্ধতিতে ফলন মৌসুমে গাছ ঢেকে রাখলে রোগবালাইয়ের সংক্রমণ কম হয় এবং ফলের উৎপাদন বহুগুণ বেড়ে যায় বলে মনে করেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে কথা বলেন কানাডার কুইবেকের বিশপ ইউনিভার্সিটির কৃষিবিদ এবং গবেষক মিরেলা আউন। যিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃষি নেট পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, ফল উৎপাদনে নেটের ব্যবহার নিয়ে এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। প্রাথমিকভাবে ফল উৎপাদনকারীরা শিলাবৃষ্টির হাত থেকে রক্ষার জন্য গাছে নেটের ব্যবহার শুরু করেন। বর্তমানে তারা নেট ব্যবহারের মাধ্যমে পোকামাকড় থেকে রক্ষার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। স্থানীয় প্রাকৃতিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে কীটপতঙ্গের আকার ও নেটের বুনন।
নেট পদ্ধতির বিষয়ে মিরেলা আউন আরও বলেন, চাষিরা নেট ব্যবহারের মাধ্যমে চাইলে কীটপতঙ্গের আক্রমণ বন্ধ করতে পারেন। নেট ব্যবহারের কৌশল হলো পরাগায়ন সময়ের পরে নেট প্রয়োগ করা। তা না হলে মৌমাছির মতো পরাগায়নকারী পোকাও বাধার সম্মুখীন হয়। আরেকটি হলো দিনের বেলায় নেট খুলে রাখা। যাতে মৌমাছির মতো উপকারী পোকাগুলো আসতে পারে।
ফরাসি এবং ইতালীয় আপেল বাগানে নেট পদ্ধতি বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত। সেখানে আপেলগাছের সারিগুলোর ওপর নেট বিছিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এতে কীটপতঙ্গের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ব্যয়বহুল এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারও কম হয়। অধ্যাপক আউন ফলপ্রেমীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যখন আপনি জানেন, আপনার হাতের ফলটি নেট দিয়ে ঢেকে উৎপাদন করা হয়েছে এবং এতে কীটনাশকের ব্যবহার কম হয়েছে, তখন এটি ভোক্তা হিসেবে আপনার জন্য ভালো খবর।’
নেট পদ্ধতিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার উপায় হিসেবেও দেখা হচ্ছে। উষ্ণ পরিস্থিতিতে নতুন কিছু পোকামাকড় এবং রোগের পুনরুত্থান দেখা গেছে। কিছু অঞ্চলে খরা এবং ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে কীটপতঙ্গের আক্রমণ আরও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে নেট ব্যবহারের মাধ্যমে ফলে আক্রমণ কমানো সম্ভব।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অবস্থান, নেটের ধরন এবং ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে সূর্যের বিকিরণ থেকে গাছকে রক্ষা করতে পারে। তবে নেট ব্যবহারে গাছের চারপাশে আরও আর্দ্র পরিবেশ হতে পারে। কিন্তু আশার কথা হলো, কিছু গবেষক হাইড্রোফোবিক নেটের ওপর কাজ করছেন। যেখানে একটি বোটানিক্যাল কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে নেটকে পানিরোধক হিসেবে তৈরি করা যায়। সূত্র : বিবিসি