× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হাওরের ধানের দাম মণপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা কমেছে

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:২১ পিএম

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:২২ পিএম

হাওর থেকে ধান এনে ঘাটে জমা করছেন কৃষকরা                                                                              ।প্রবা ফটো

হাওর থেকে ধান এনে ঘাটে জমা করছেন কৃষকরা ।প্রবা ফটো

হাওর থেকে ধান আসা শুরু হয়েছে কিশোরগঞ্জের ভৈরব মোকামে। কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ধানের দাম মণপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা কমেছে। তবে বাজারে চালের দামের তুলনায় ধানের দাম অনেক কম। 

ভৈরব মোকামে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার মণ ধান নৌকা থেকে লোড-আনলোড হচ্ছে। দেশের উত্তর-পূর্ব হাওরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ধান-চালের মোকাম কিশোরগঞ্জের ভৈরব বন্দরে প্রতি সপ্তাহে কয়েক হাজার মণ নতুন ধান কেনাবেচা শুরু হয়েছে। নদীর পার এলাকায় কৃষকরা হাওর থেকে ধান এনে ঘাটে জমা করছেন। সেখানেই চলছে বেচাকেনা। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে মোকাম। তবে চলতি মৌসুমে সরকার এখনও কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান-চাল কেনা শুরু করেনি। ফলে ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।

হাওরে ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। বর্তমানে মূলত মোটা জাতের হিরা ধান বেশি আমদানি হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পাইকারি আড়তগুলোতে প্রতি মণ ধান ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা মৌসুমের শুরুতে ছিল ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা। গত বছরের এই সময়ে প্রতি মণ ধান ছিল ৬০০ টাকার মতো। হাওরের কিশোরগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার প্রায় ২০টি উপজেলা থেকে বোরো ধান আমদানি হচ্ছে ভৈরবে। বেশিরভাগ ধান বাজারে আসে ট্রলারযোগে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবছরই বৈশাখ মাসের শুরুতে ধানের দাম কমে আসে। কারণ কৃষকরা ক্ষেতে ধান কাটার পর আধা শুকনা ধান বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দেন। 

এদিকে বৈশাখের শুরুতেই স্থানীয় রাইস মিলগুলো চালু হয়েছে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে ধানের অভাবে অধিকাংশ রাইস মিল বন্ধও হয়ে যায়। মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, আশুগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার রাইস মিল মালিকরা ভৈরব বাজারে নতুন ধান কিনতে আসেন। নদীপথে সহজ যোগাযোগব্যবস্থা থাকায় হাওরে উৎপাদিত অধিকাংশ ধান সরাসরি চলে আসে ভৈরবে।

আশুগঞ্জের খান রাইস মিলের মালিক আইয়ুব খান ও রিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক কবির মিয়া বলেন, ‘ধানের অভাবে বছরে এক দুই মাস রাইস মিল বন্ধ থাকে। এ বছর ধানের ফলন ভালো হওয়ায় আমরা প্রতিদিন এক থেকে দেড় টন ধান কিনতে পারছি। যদিও ভেজা ধান কিনতে হচ্ছে। শুকনা ধান আমদানি হলেই দাম বাড়বে। এবার ধান-চাল বিক্রি করে লাভবান হওয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’ 

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলার অষ্টগ্রামের আব্দুল্লাহপুরের কৃষক আক্কেল আলী বলেন, ‘আমি ১০০ মণ ধান নিয়ে ভৈরব মোকামে এসেছি। ধান ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা মণ দারে বিক্রি করেছি। এতে আমার উৎপাদন ব্যয় উঠে এলেও তেমন লাভবান হতে পারিনি। ধান উৎপাদন করতে সার, বীজ, জ্বালানি, কীটনাশক ব্যবহার ও শ্রমিক খরচ হিসাব করে প্রতি মণ ধান উৎপাদনে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০০ টাকা।’ 

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে আসা কৃষক রহমত আলী বলেন, ‘আমি ১৫০ মণ মোটা ধান ভৈরবে এনে ৭১০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। নতুন ধান বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে দাম বেড়ে গিয়ে আবার হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় আমরা হতাশ।’

ভৈরব বাজারের মহসিন মিয়া অ্যান্ড সন্স আড়ত মালিক খুশনু মিয়া জানান, বৈশাখ মাসের শুরুতেই কৃষকরা ঝড়বৃষ্টির ভয়ে কাঁচা ধান কাটতে শুরু করেন। তা নিয়েই ভৈরব বাজারে আসেন। ধান ভেজা হওয়ায় দাম কম। এক মাস পর শুকনা ধান আমদানি হলে দাম বেড়ে যেতে পারে বলে তিনি জানান। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম ১০০ টাকার মতো বেশি রয়েছে। 

ভৈরব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. হুমায়ূন কবির বলেন, সরকার এখনও খাদ্যগুদামের ধান-চাল কেনা শুরু করেনি। এবার সরকারিভাবে প্রতি কেজি চালের দাম নির্ধারণ করেছে ৪৪ টাকা এবং ধানের দাম ৩০ টাকা। সরকার ধান-চাল কেনা শুরু করলে দাম বৃদ্ধি পাবে। 

ভৈরব খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন ধান কেনার সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা নেই। নির্দেশনা এলে গুদামে সরকারিভাবে ধান-চাল কেনা শুরু করব।’

কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুস সাত্তার জানান, সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয় শুরু হলেই দাম বাড়বে। 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা