প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৫৯ পিএম
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:২৩ পিএম
টানা দুই সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর আবার কমতে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে ব্যাংকঋণে সুদের হার বাড়িয়েই চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতেই বিশ্ববাজারে কমতে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের চাহিদা। ফলে আবারও নিম্নমুখী হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৩২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৮৭ ডলার ১ সেন্ট হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ২২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৮৩ ডলার ৪ সেন্টে লেনদেন হয়েছে। তবে গত বুধবার উভয় বেঞ্চমার্কে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ২ শতাংশ বেড়ে এক মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করেছিল। কিছু দিন ধরে ব্যাংকঋণে সুদের হার স্থির রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। এতেই বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বেড়েছিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে ২০০৭ সালের পর ব্যাংকঋণে সবচেয়ে বেশি সুদের হার বাড়িয়েছে ফেড। মূল্যস্ফীতি কমাতে যদি ধারাবাহিকভাবে সুদের হার বাড়তেই থাকে, তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জ্বালানি তেলের চাহিদা কমতে পারে বলেও মনে করছেন জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান আইজির বাজার কৌশলবিদ ইয়েপ জুন রং বলেন, ’সাম্প্রতিক সময়ে ফেডের সিদ্ধান্তের কারণে সম্ভাব্য মন্দায় জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’
এদিকে ইউএস কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) গত মাসে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদরা ধারণা করেছিলেন এ বৃদ্ধির পরিমাণ হবে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে সিপিআই ছিল শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। তবে আগামী মে মাসে ফেডের সিদ্ধান্তে যদি আবারও সুদের হার বাড়ে, তাহলে এর সিপিআইও বাড়বে। এদিকে ব্যাংক খাতের এই অস্থিরতার কারণে চলতি বছরের শেষে কিছুটা অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দিয়েছেন ফেড কর্মীরা।
ফুজিটোমি সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেডের বিশ্লেষক তোশিতাকা তাজাওয়া বলেন, ’যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য মন্দার কারণে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা কমবে। এদিকে ডব্লিউটিআইয়ের দাম গত ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৩ ডলারের ওপরে উঠেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল নিয়েও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বেড়ে গত সপ্তাহে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ব্যারেল হয়েছে। যদিও এই উত্তোলনের পরিমাণ ৬ লাখ ব্যারেল ধরা হয়েছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি সচিব জেনিফার গ্রানহোম বলেন, ’বাইডেন প্রশাসন শিগগিরই পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ পুনরায় পূরণের পরিকল্পনা করেছে এবং এটি তেলের দাম কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
তবে দুই সপ্তাহ আগে অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) এবং রাশিয়ার মতো মিত্ররা জ্বালানি তেল উৎপাদন কমাতে সম্মত হওয়ার পর তেলের বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্বব্যাপী তেলের বাজার সংকুচিত হতে পারে এবং দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল।
সূত্র : রয়টার্স