জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৩০ পিএম
প্রবা ফটো
চলতি মৌসুমে জয়পুরহাটে শজনে ডাঁটার উৎপাদন বেড়েছে। তাই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণে শজনে ডাঁটা দেখা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, পতিত জমি, রাস্তার পাশ, পুকুরপাড় এবং জমির আইলে শজনে গাছ লাগানো হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত শজনে ডাঁটার ফলন হয়। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারির মাঝমাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি দুই মাস ভরা মৌসুম।
এ সময় জেলার বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০ টনের বেশি শজনে ডাঁটা রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। পাইকারি বাজারে মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি শজনে ডাঁটা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলা শহরের নতুনহাট বাজারে মৌসুমের প্রতিদিনই শজনের পাইকারি বাজার বসে। এ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা সাইকেলের সামনে ও পেছনে বড় বড় ব্যাগে করে বিক্রির জন্য শজনে নিয়ে আসছেন। এ ছাড়াও অনেকে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে আঁটি বেঁধে শজনে ডাঁটা নিয়ে এসেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে।
কৃষক ছমির উদ্দিন বলেন, জমির আইলে ও রাস্তার পাশে কিছু শজনের গাছ লাগানো আছে। সেসব গাছে প্রতি বছরই শজনে ধরে। এবার ৯০ কেজির মতো শজনে বিক্রি করেছি। আরও কিছু গাছে আছে।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো বড় শজনে গাছের ডাল কেটে লাগানোর এক বছর পর ফলন হয়। গাছ বড় হলে ফলন বাড়ে। গাছে আগাছা কেটে দেওয়া ছাড়া এতে তেমন কোনো খরচ নেই।
শজনে ডাঁটা সংগ্রহের কাজে জড়িত শ্রমিক মোকসেদ আলী বলেন, নতুনহাটে আমরা ৮ জন শ্রমিক এক ব্যবসায়ীর শজনে ডাঁটার কাজ করি। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০টি শজনে ডাঁটার বস্তা করে থাকি। বস্তাপ্রতি আমরা পাই ৬০ টাকা করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ চলে। শজনে ডাঁটা ওজন করে নেওয়া, আঁটি বাঁধা, বস্তা করা এরপর ট্রাকে তুলে দেওয়া সবই করতে হয়।
শজনে ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, এখন বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে শজনে ডাঁটা কেনা হচ্ছে। প্রতিদিন এক হাজার মণের বেশি শজনে ডাঁটা কেনা হয়। এসব শজনে ডাঁটা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। কেজিপ্রতি ২ থেকে ৪ টাকা লাভে শজনে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন বলেন, জয়পুরহাট জেলার পাঁচ উপজেলায় গত মৌসুমে ৩৭৫ হেক্টর জায়গায় শজনে গাছের চাষ হয়েছে। শজনে উৎপাদন হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। এ মৌসুমে ৩৭৫ হেক্টরের বেশি জায়গায় শজনের বাণিজ্যিক চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড়ে ২০ টন করে শজনে ডাঁটা হয়ে থাকে। এ বছর আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় শজনের ফলন ভালো হয়েছে। এতে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর উৎপাদন বেড়েছে।