আনিছুর রহমান
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৮:৫৩ এএম
ফাইল ফটো
বেশ কিছুদিন ধরেই লেনদেন খরায় ভুগছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম। সাধারণ মানুষসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অর্থও আটকে গেছে পুঁজিবাজারে।
এ অবস্থায় পুঁজিবাজারের লেনদেন খরা কাটাতে এবং তারল্য বাড়াতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে অর্থ মার্জিন আকারে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, কমিশন বৈঠকে এরই মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে। এই মার্জিন ঋণের সুদের হার হবে এফডিআর রেটের কাছাকাছি। এ অর্থ পুঁজিবাজারে আসলে তারল্য বাড়বে, সেইসঙ্গে লেনদেন কমে আসায় বর্তমানে যে সংকট চলছে তা কেটে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের অর্থ পাবেন তারাই যাদের পূর্বের রেকর্ড ভালো। কোনো প্রতিষ্ঠান কতটুকু ঋণ পাবে তা নির্ভর করবে সেই প্রতিষ্ঠান নিজে কতো টাকা বিনিয়োগ করবে তার ওপর। প্রাথমিকভাবে সিএমএসএফ থেকে ৩০০ কোটি টাকার মতো ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ঋণ পাওয়ার জন্য যেসব ব্রোকারেজ হাউসের মালিকপক্ষের তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে। ওইসব কোম্পানি থেকে গ্যারান্টি দিতে হবে। এ ছাড়াও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের জন্য মূল প্রতিষ্ঠান থেকে গ্যারান্টি দিতে হবে।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর, সঠিক তথ্য না থাকায় দীর্ঘদিন কোম্পানির কাছে পড়ে থাকা অবিক্রিত বা অবণ্টনকৃত নগদ বা স্টক লভ্যাংশ একসঙ্গে করার উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ)। যার চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান।
সিএমএসএফের তথ্য মতে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ আকারে আটকে থাকা নগদ ৫১০ কোটি টাকা এরই মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। আর স্টক বা শেয়ার আকারে এসেছে ৬৫০ কোটি টাকা মূল্যের লভ্যাংশ। তাতে সব মিলিয়ে সিএমএসএফের আকার দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। নগদ লভ্যাংশের অর্থের ২২৫ কোটি টাকা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ঋণ আকারে দেওয়া হয়েছে। আর ৫০ কোটি টাকা ‘আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ডে’ বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাকি টাকা কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশে জমা রয়েছে। এ ছাড়াও এই ফান্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা।
সিএমএসএফের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, বিএসইসি থেকে নির্দেশনা পেলে গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করে তারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য অর্থ দিতে প্রস্তুত। বর্তমানে তাদের কাছে নগদ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আছে। তবে বিএসইসি যদি এর চেয়ে বেশি অর্থ চায় তবে সেটার ব্যবস্থাও করা যাবে। এজন্য আইসিবির কাছ থেকে কিছু অর্থ ফেরত নিতে হতে পারে।