প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৩ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৪ পিএম
আর্জেন্টিনায় বিআরআইয়ের একটি প্রকল্প। ছবি: সংগৃহীত
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনেশিয়েটিভকে (বিআরআই) দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের স্বপ্নের প্রকল্প বলা হয়। বিশ্বের ১৫১টি দেশে ট্রিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পটির কার্যক্রম রয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটির অন্তর্ভুক্ত ২২টি দেশে প্রায় ২৪ হাজার কোটি ডলারের বেইল আউট ঋণ দিয়েছে বেইজিং।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে। যৌথভাবে গবেষণাটি করেছে বিশ্ব ব্যাংক, হার্ভাড কেনেডি স্কুল, এইডডেটা, এবং জার্মানির কিল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরআই প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৩ সাল থেকে শুরু হলেও তার আগে থেকে প্রকল্পটির ধারণা নিয়ে কাজ করছিল চীন। তখন থেকেই বিশ্বের নানান দেশে বড় অবকাঠামো তৈরিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছিল দেশটি।
২০১৩ সালে বিআরআই প্রকল্প শুরুর পর বিনিয়োগের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয় বেইজিং। তখন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্ত প্রকল্পটি শুরুর পর হঠাৎ করে নির্মাণ সামগ্রির দাম হু হু করে বেড়ে যায়। এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশের বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয়ও ধারণার চেয়ে বেড়ে যায়। ফলে পূর্ব ধারণার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় করতে হয়েছে চীনকে।
বিআরআই প্রকল্পে ২২টি উন্নয়নশীল দেশে চীন ২০০৮ থেকে ২১ সালের মধ্যে যত অর্থ বিনিয়োগ করেছে তার প্রায় ৮০ শতাংশ করা হয়েছে ২০১৬ সালের পর। মূলত তখন থেকে নির্মাণ সামগ্রির দাম বাড়তে শুরু করে।
রয়টার্স জানায়, বিআরআই প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে আর্জেন্টিনা। পাকিস্তান নিয়েছে ৪ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার। মিসর নিয়েছে ১ হাজার ৫৬০ কোটি ডলার। ১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি নিয়েছে আরও নয়টি দেশ।
ঝুঁকি নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চীনের এত ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কারমেন রাইনহার্ট বলেন, বেইজিং মূলত তার নিজের ব্যাংকে বাঁচাতে চাইছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বেইল আউট দিচ্ছে।
কোনো প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত বাজেটে করা সম্ভব না হলে নতুন করে যে ঋণ দেওয়া হয়েছে তাকেই ওই গবেষণায় বেইল আউট বা উদ্ধার ফান্ড হিসেবে দেখা হয়েছে।
এ অবস্থায় গত এক দশকে বিদেশে চীনা ঋণ বিপুল বেড়েছে। ২০১০ সালে বিদেশে চীনা ঋণ ছিল ৫ শতাংশের কম। ২০২২ সালে তা বেড়ে ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনটি মূল লেখক বার্ড পার্কস বলেন, যেসব উন্নয়নশীল দেশে চীন বিআরআইয়ের কাজ শুরু করেছে সেখানে বেইল আউট দেওয়া না হলে প্রকল্পগুলোই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনটি হলে ঋণদানকারী চীনা ব্যাংকগুলো বড় রকমের লোকসানে পড়বে। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করার মধ্য দিয়ে লোকসানে পড়া এড়াতেই চীন বেইল আউট দিচ্ছে। অধিকাংশ বেইল আউট দেওয়া হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশে। তবে চীনা বেইল আউট কর্মসূচি ‘অস্বচ্ছ ও অসমন্বিত বলে মনে করেন’ তিনি।
সূত্র: রয়টার্স