প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩ ২১:৩৪ পিএম
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩ ০০:০৪ এএম
সংগৃহীত
পোল্ট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকার মধ্যে নির্ধারণের পর খুচরা বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। রমজানের দ্বিতীয় দিনে ঢাকায় বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।
শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মোহাম্মদপুর টাউন
হল কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে কমেছে
২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। সোনালি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবারও
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত; সোনালি
বিক্রি হয়েছে ৩৬০ টাকা পর্যন্ত।
মুরগির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা সুজন মিয়া বলেন, বাজারে মুরগির দাম এখন অনেক কমছে। ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। ২২০ টাকাতেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছেন। আর সোনালি ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারের বিক্রেতা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মুরগির দাম অনেক কমছে। ব্রয়লার মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। দাম সামনে আরও কমবে। বাজার আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। মুরগির সরবরাহ যত বাড়বে তত দাম কমবে।
দাম কমায় খুশি ক্রেতারা। কারওয়ানবাজারের
নিয়মিত ক্রেতা লিটন হোসেন বলেন, উদ্যোগ নিলেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আসবে। দরকার সদিচ্ছা।
আরেক ক্রেতা আফজাল তালুকদার বলেন, যে অবস্থা হচ্ছিল তাতে মনে হচ্ছিল মুরগির দাম ৩০০
টাকায় চলে যাবে। এখন ২২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ভালোভাবে বাজার তদারক করে সবকিছু এভাবে
ক্ষতিয়ে দেখে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ভোক্তা অধিকার
সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম
সফিকুজ্জামান জানান, কাজী ফার্মস, প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব বহুমুখী
ফার্মস ও সিপি বাংলাদেশের খামার পর্যায়ে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় মুরগি বিক্রির সিদ্ধান্ত
নিয়েছে। এর আগে অযৌক্তিক দামে মুরগি বিক্রি করায় চার কোম্পানিকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা
অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কোম্পানিগুলো খামার পর্যায়ে এই দামে মুরগি বিক্রির প্রতিশ্রুতি
দেয়।
‘৫২ দিনে ৯৩৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে করপোরেটরা’
প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ
পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন, সরকারি তদারক
না থাকায় হরিলুট করেছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। গত ৫২ দিনে তারা মুরগি ও বাচ্চার দাম
বাড়িয়ে অতিরিক্ত ৯৩৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রান্তিক খামারিদের ব্রয়লার মুরগির উৎপাদনব্যয় এখন কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। কিন্তু করপোরেট প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনব্যয় ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৩০ টাকা পর্যন্ত এসব মুরগি বিক্রি হয়েছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিদিন দুই হাজার টন মুরগি বাজারে এসেছে। সেই হিসাবে দিনে তাদের অতিরিক্ত মুনাফা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। এভাবে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ৫২ দিনে মুরগি বিক্রি করে করপোরেট কোম্পানিগুলো লাভ করেছে ৬২৪ কোটি টাকা। আর একদিনের মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে তাদের ৩১২ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। সব মিলিয়ে মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত লাভ হয়েছে তাদের।
সংগঠনটির দাবি, দেশে প্রতিদিন মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় ২০ লাখ। এসব বাচ্চা কোম্পানিগুলো উৎপাদন করে। একেকটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় ২৮-৩০ টাকা, যা চলতি বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা। অথচ প্রতিটি এখন ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় দেওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। ফলে প্রতি বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে করপোরেট কোম্পানিগুলো।