× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আবারও সুদের হার বাড়াল ফেড

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩ ২১:২১ পিএম

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩ ২২:০০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংকঋণে আবারও সুদের হার বাড়াল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেড। ব্যাংক খাতের বিদ্যমান অস্থিরতা এবং দুটি ব্যাংকের পতনের পরও সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে দেশটিতে সুদের হার ৪ দশমিক ৭৫ থেকে বেড়ে ৫ শতাংশ হয়েছে। তবে ফেডের এমন সিদ্ধান্ত ব্যাংক খাতকে অস্থির করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। 

তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে ফেড সুদের হার বাড়িয়েছে। কিন্তু তাদের এমন সিদ্ধান্তের ফলে সামনের মাসগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমতে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞদের এমন মন্তব্য উড়িয়ে দিয়ে ফেড এটিকে ব্যাংক খাতের স্থিতিস্থাপক বলেই অভিহিত করেছে।

গত বছর থেকে উচ্চমাত্রায় ব্যাংকঋণে সুদের হার বাড়িয়ে চলেছে ফেড, যা দেশটির ব্যাংক খাতে চাপ সৃষ্টি করেছে। দেশটির ব্যাংকগুলোতে থাকা বন্ড নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন শঙ্কা। কারণ নিয়মিতভাবে সুদের হার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় এ বন্ডগুলোর দাম প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। এদিকে লোকসান দিয়ে হলেও ব্যাংকগুলো বন্ড ধরে রেখেছে। যদি এভাবে সুদের হার বাড়তেই থাকে, তাহলে বন্ড বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদের হার বাড়ানোর প্রবণতা আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও অনেকটা বিফলে গেছে। তবে তাদের মন্তব্য অনেকটা স্বীকার করে নিয়ে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, ‘আমরা মূল্যস্ফীতি কমানোর লড়াইয়ে মনোনিবেশ করেছি। তবে এ প্রক্রিয়া বর্তমান সময়ে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বৃদ্ধি করতে পারে। যদিও এই প্রভাব এখনও স্পষ্ট নয়।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে গত সপ্তাহে একই রকমভাবে ব্যাংকঋণে সুদের হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডও গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্তের দিকে এগিয়ে যাবে। যদিও ফেব্রুয়ারিতে দেশটির মূল্যস্ফীতি অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিদরা তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, এ বছর যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। এমনকি ২০২৪ সালের জন্যও অর্থনীতিবিদরা যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন তার থেকেও কম হবে। সে সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ২ শতাংশ।

এদিকে সুদের হার বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাবে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক এবং সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর এবার অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ব্যাংক ফার্স্ট রিপাবলিক। গত দুই সপ্তাহে ফার্স্ট রিপাবলিকের শেয়ারদর কমেছে ৮০ শতাংশ। যেখানে ফেব্রুয়ারির শুরুতে ফার্স্ট রিপাবলিকের বাজারমূল্য ছিল ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০০ কোটি ডলারে। একই রকমভাবে ২০০টি ব্যাংক পতনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি অস্থিতিশীল বাজার শান্ত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিলেও শঙ্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি এসব ব্যাংক। 

সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, আতঙ্কিত হয়ে গ্রাহকরা টাকা তুলে নেওয়ায় ওই তিনটি ব্যাংকে যেভাবে ধস নেমেছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১৮৬টি ব্যাংক একই ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ব্যাংকের ক্ষেত্রে যদি তাদের অর্ধেক গ্রাহক নিজেদের সঞ্চিত অর্থ তুলে নেয়, তাহলেই এসব ব্যাংকের পতন ঘটবে।

তবে সুদের হার বাড়ানোর ইঙ্গিত ফেড আগে থেকেই দিয়ে আসছিল। সে সময় তারা জানিয়েছিল, সুদের হার বৃদ্ধির এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখার প্রয়োজন হবে। কিন্তু এবার ফেড বলছে, সুদের হার বাড়ানোর সঙ্গে আরও কিছু অতিরিক্ত নীতি গ্রহণ করতে হতে পারে। তবে ফেডের বিভিন্ন নীতি গ্রহণের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি গবেষণা সংস্থা প্যানথিয়ন মাইক্রোইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ান শেফার্ডসন বলেন, ’এই পদক্ষেপগুলো স্পষ্টভাবে সংকেত দেয় যে, ফেড নিজেই অস্থিরতায় ভুগছে।’ 

এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে ব্যাংকঋণে সুদের হার ছিল প্রায় শূন্যের কাছাকাছি, এক বছরে নয়বার সুদের হার বাড়ার ফলে এটি এসে ঠেকেছে ৫ শতাংশে, যা ২০০৭ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ স্তর। তবে ফেড বলছে, মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের হার বাড়ানো হচ্ছে। কারণ ব্যাংকঋণে সুদের হার বাড়লে বাড়ি কেনা, ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নেওয়া বা অন্য ঋণ গ্রহণের খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু ফেড প্রত্যাশা করছে সুদের হার বাড়ায় চাহিদা কমে যাবে। ফলে দামও অনেকাংশে কম হবে।

সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়েও ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফেড। 

তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, মূল্যস্ফীতি গত ১২ মাসে বেড়েছে ৬ শতাংশ। খাবার এবং বিমানভাড়াসহ কিছু পণ্যের দাম দ্রুত বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি সুদের হার বাড়াতে হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জেরোমি পাওয়েল। 

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালের শেষের দিকে সুদের হার ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু ফেড তার মূল্যস্ফীতির লড়াই থেকে সরে আসবে না।

সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা