প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৪২ পিএম
প্রবা ফটো
২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। একই সঙ্গে রপ্তানি আদেশ মিলেছে আনুমানিক ৩ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার, যা টাকার অঙ্কে ৩০০ কোটি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। এবারের মেলায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছর অর্থাৎ ২৬তম আন্তর্জাতিক মেলায় পণ্য বিক্রি হয়েছিল ৪০ কোটি টাকার।
মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘পূর্বাচলে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত বাণিজ্য মেলা সফল হয়েছে। গত বছর করোনা থাকলেও বাণিজ্য মেলা বেশ সাড়া পেয়েছিল। এবারের বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ লাখ। এ ছাড়া ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং ৩০০ কোটি টাকার ক্রয়াদেশ বেশ আশা জাগিয়েছে আমাদের। মেলায় পণ্যের বৈচিত্র্য ছিল বেশ। রপ্তানি বাড়াতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’
ভুলত্রুটি বিবেচনায় নিয়ে সামনে মেলার আয়োজন করা হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মেলায় দূরের অবস্থান নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে শঙ্কা থাকলেও আমরা যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি সামনের বছর মেলায় আরও উপস্থিতি বাড়বে। এ বছর কোনো ভুলত্রুটি থাকলে তা বিবেচনায় নিয়ে সামনের বছর আরও সুন্দর আয়োজনের চেষ্টা থাকবে।’
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘গত বছর মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের বেশ কষ্ট হলেও এবারে তুলনামূলক কম হয়েছে। আর এক দিন পরই প্রধানমন্ত্রী পূর্বাচলে পাতাল রেলের উদ্বোধন করবেন। আর এই পাতাল রেলের কাজসহ হাইওয়ের ৬ লেনের কাজ শেষ হলে বাণিজ্য মেলায় যাতায়াত ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। এতে মেলায় লোকসমাগম বাড়বে। তবে সংকট তৈরি হবে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভালোভাবে জায়গা দিতে। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আগেই সাবধানতা অবলম্বন করে জায়গা বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।’
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় দেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির বিকল্প নেই। গার্মেন্টস ছাড়াও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর প্রতি মনোযোগী হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।
মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ক্যাটাগরির সেরা প্যাভিলিয়ন, স্টল ও প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৩৩১টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্টুরেন্ট ছিল; যা গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। মেলায় ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ মোট ১৭টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। যার মূল লক্ষ্য দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তা প্রদান।
বিকিকিনি নিয়ে বিক্রেতারা কতটুকু খুশি?Ñ এমন প্রশ্নের জবাবে মেলা শেষে বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি ভালো হওয়ায় তারা বেশ খুশি। থ্রিপিস বিক্রেতা শারমীন আক্তার বলেন, ‘এবার মেলায় বিক্রি নিয়ে শতভাগ খুশি। আশার তুলনায় বেশি বিক্রি করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
আরেক বিক্রেতা মামুন মিয়া বলেন, ‘মেলায় হাতে তৈরি পণ্য এনেছিলাম। বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ পণ্য বিক্রি করতে পেরে আনন্দ পাচ্ছি।’