প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৩৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
নতুন করে গতকাল সোমবার আবারও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলেছে, আগে ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ বলা হলেও এ বছর তা হবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ায় এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনের করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে আসায় প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। এদিকে ২০২২ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে নতুন পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি বাড়ার কথা বলা হলেও গত বছরের তুলনায় এটি এখনও কম। আইএমএফ বলছে, ২০২৪ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। অক্টোবরে দেওয়া পূর্বাভাসের তুলনায় এটি ১০ শতাংশ কম।
আইএমএফ জিডিপির পূর্বাভাসে বলছে, বিশ্বের বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। অক্টোবরের পূর্বাভাসে এটি ১ শতাংশ বলা হয়েছিল। মূলত ২০২২ সালের শেষ দিকে চাহিদা এবং বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।
এ বিষয়ে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়ে-অলিভার গোরিনচাস বলেন, ‘মন্দার শঙ্কা কেটে গেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ইতিবাচক অবস্থানে আছে।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, মূল্য নিয়ন্ত্রণে আরও কাজ করতে হবে। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীনের করোনা বিধিনিষেধের কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে আরও বিঘ্ন ঘটতে পারে।
ইউরোপের জিডিপির বিষয়ে আইএমএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ধারণারও চেয়েও কম সময়ের মধ্যে জ্বালানির উচ্চমূল্যের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। জ্বালানির মূল্য কমার বিষয়টি এ অঞ্চলের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর সম্ভাবনাকে সহায়তা করেছে। ইউরোপে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ০ দশমিক ৭ শতাংশ। অক্টোবরের পূর্বাভাসে যা ০ দশমিক ৫ শতাংশ বলা হয়েছিল।
এদিকে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক মন্দায় পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। যুক্তরাজ্যের জিডিপির প্রবৃদ্ধি এ বছর ০ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পাবে। দেশটির মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে।
করোনার বিধিনিষেধে অর্থনৈতিক স্থবিরতার পর ঘুরে দাঁড়াচ্ছে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। বিধিনিষেধ শিথিলের আগে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু নতুন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। মূলত, বিধিনিষেধ শিথিলের কারণে অর্থনেতিক কার্যক্রম বাড়ায় দেশটির প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে ২০২৪ সালে এটি কমে যাবে। ২০২২ সালে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ শতাংশ। গত ৪০ বছরের মধ্যে যা বৈশ্বিক গড় প্রবৃদ্ধির তুলনায় কম ছিল।
একই সময় ভারতের প্রবৃদ্ধি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে পিয়ে-অলিভার গোরিনচাস বলেন, ‘অনেক দেশে মূল্যস্ফীতির হার কমছে। ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। একইসঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ভালো সময়ের বার্তা দিচ্ছে।’