প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:১৭ পিএম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৪৯ পিএম
সিঙ্গাপুরে পলাতক ঋণখেলাপিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন অর্থঋণ আদালত। আসামির নাম মুজিবুর রহমান মিলন। তিনি সিলভিয়া গ্রুপের মালিক। বিভিন্ন ব্যাংকে তার দায় এক হাজার কোটি টাকার বেশি। বৃহস্পাতিবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এই রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এই আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ২৪ কোটি ৭২ লাখ টাকার মামলায় এ রায় দেওয়া হয়।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুর রহমান মিলন বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় দণ্ডিত হয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকায় জারি করা মামলায়ও প্রতিদ্বন্দিতা করেননি। এসব ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে কোনো সহায়ক জামানত নেই। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ব্যাংক বিশ্বত্ব সূত্রে জানতে পেরেছে মুজিবুর রহমান মিলন বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংকসহ সাউথইস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সিলভিয়া গ্রুপের মালিক মুজিবুর রহমান মিলন তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করে বিদেশে পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে পলাতক থাকায় এবং ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকগুলো আর্থিক হুমকির মুখে পড়েছে। ব্যাংকের প্রতি আমানতকারীদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। ফলে মুজিবুর রহমান মিলনের (পাসপোর্ট নং-C 0650168) বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় দেশে ফিরিয়ে আনার আদেশ হওয়া একান্ত আবশ্যক।
চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতেই মুজিবুর রহমান মিলনের বিরুদ্ধে প্রায় ১০টি মামলা চলমান আছে। তিনি চেক ডিজঅনারের বহুসংখ্যক ফৌজদারি মামলায় দণ্ডিত এবং বিদেশে পলাতক মর্মে অন্যান্য মামলার নথিতেও তথ্য রয়েছে। এই মামলাসহ অন্যান্য মামলায় মুজিবুর রহমান মিলনের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার কম নয়। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও মুজিবুর রহমান মিলনের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায় করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানা অতিক্রম করে আদালতের এখতিয়ারের বাইরে চলে যাওয়ায় এই আদালতে চলমান বহুসংখ্যক ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম ফলপ্রসূ হচ্ছে না। আইনি দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারকারী ঋণখেলাপি বিবাদীরা বিদেশে বসেও বছরের পর বছর মামলা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে অর্থঋণ আদালত আইনে মামলা নিষ্পত্তির সুনির্দিষ্ট সময়সীমা থাকলেও নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। আইনি কাঠামোর দুর্বলতার কারণে খেলাপি ঋণ আদায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি।