× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পোলট্রিশিল্পে বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় অব্যাহত রাখার দাবি

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০৫ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

পোলট্রিশিল্পে বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি অর্থ সচিবের কাছে চিঠি লিখে এ দাবি জানিয়েছেন ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি কাজী জাহিন শাহপার হাসান। ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন হলো মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী হ্যাচারি মালিকদের সংগঠন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০০৪ সালের জুলাই থেকে পোল্ট্র্রিশিল্প বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় পেয়ে আসছে। বিদ্যুৎ বিভাগও গত অক্টোবরে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে এ খাতে ২০ শতাংশ ছাড় রেখেই আদেশ জারি করেছে। তারপরও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) পিএলসি গত অক্টোবর মাস থেকে ২০ শতাংশ ছাড় বাদ দিয়ে শতভাগ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। 

তাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের আগের নির্দেশনার আলোকে পোল্ট্রি শিল্পে বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় অব্যাহত রাখার দাবি জানানো হয়েছে। তবে অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায় নি বলে জানা গেছে। 

এ প্রসঙ্গে বিএবি সভাপতি কাজী জাহিন শাহপার হাসান বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটে বিশ্ববাজারে পোলট্রিশিল্পের কাঁচামালের নানা উপকরণের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এ ছাড়া এখনো পুরোপুরিভাবে করোনা মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি এ খাতটি। এরমধ্যে বর্তমান লোডশেডিং এবং জ্বালানির রেকর্ড পরিমাণে মূল্যবৃদ্ধিতে সংকট আরও চরম আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় প্রত্যাহার করা হলে তাদের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। তাই তারা এ ছাড় অব্যহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চাহিদা কমে যাওয়ায় হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদন কমেছে প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ। লোডশেডিংয়ে জেনারেটর খরচ বেড়েছে। পরিবহন খরচ বেড়েছে ২৫-৩০ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিলে ছাড় অব্যাহত রাখার পাশাপশি এ খাতের উদ্যোক্তাদের সরকারি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। খাদ্যের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কর কমাতে হবে। তা না হলে সস্তায় ভোক্তাকে ডিম বা মুরগি দেওয়া সম্ভব হবে না।

ডিম থেকে বাচ্চা তৈরিতে ইনকিউবেটরসহ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত কক্ষে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। চলমান লোডশেডিংয়ের কারণে ব্রয়লারের বাচ্চা উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখলেও, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে খামারিরা মুরগির বাচ্চা কিনতে ভয় পাচ্ছে। কারণ একটি খামারে বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ দরকার। যদিও প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের প্রভাব মোকাবিলায় ছোট খামারিরা জেনারেটর ব্যবহার করতে পারছেন না। সার্বিক খরচ বহন করতে না পেরে অনেকেই উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চার দশকের ব্যবধানে দেশের পোলট্রিশিল্পের বিনিয়োগ ছাড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ মানুষের। পোলট্রি খাতই এখন আমিষের চাহিদার বড় খাত। অনেকটাই ব্যক্তি ও কিছু মানুষের একক উদ্যোক্তানির্ভর খাতটি সরকারের পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই বড় হচ্ছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যিক পোলট্রিশিল্পের শুরুটা মোটেও আশাব্যঞ্জক ছিল না। সাধারণ মানুষ পোলট্রি ডিম কিংবা ব্রয়লার মুরগির মাংস খেতেই চাইত না। পোলট্রির মাংস যে কতটা সুস্বাদু, নরম ও স্বাস্থ্যসম্মত, তা বোঝাতে শুরুর দিকের উদ্যোক্তাদের অতিথি ডেকে এনে রান্না করা মাংস পরিবেশনও করতে হয়েছে। আশির দশকে এই শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মাত্র দেড় হাজার কোটি টাকা। আর বর্তমানে এই শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্য মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯০ হাজারের কাছাকাছি পোলট্রি ফার্ম রয়েছে। ছোট-বড় প্রায় ১০৫টি হ্যাচারি ও সাতটি জিপি (গ্র্যান্ড প্যারেন্ট) ফার্ম রয়েছে। মুরগির সুস্থতায় ওষুধ উৎপাদনে বর্তমানে দেশে নিবন্ধনকৃত ও অনিবন্ধনকৃত ওষুধ কম্পানির সংখ্যা ২৫০টির বেশি। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি মাসে ওষুধের টার্নওভার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। দেশে বর্তমানে ছোট-বড় প্রায় ২৫০টি ফিড মিল রয়েছে। এর মধ্যে আধুনিক ফিড মিলের সংখ্যা শতাধিক। পোলট্রি বা মুরগির ৬০-৭০ শতাংশই খরচ হয় ফিড বা খাদ্য বাবদ। এ ছাড়া এ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, ভ্যাকসিন, যন্ত্রপাতির প্যাকেজিং ব্যবসায়ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। বাড়ছে সামগ্রিক বিনিয়োগের পরিমাণ। খাতটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ব্যাবসায়িক গোষ্ঠী।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা