× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কৃষিঋণ বিতরণ কমলেও আদায় বাড়ছে

আহমেদ ফেরদাউস খান

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ২২:৫৩ পিএম

কৃষিঋণ বিতরণ কমলেও আদায় বাড়ছে

ব্যাংক খাতের নানা সংকটের কারণে কৃষিঋণ বিতরণ ও আদায় বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি বকেয়া ঋণ কমতে শুরু করেছে। বাড়ছে ঋণের স্থিতিও। গত সেপ্টেম্বর থেকে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়তে শুরু করেছে। এ খাতে গত বছরের আগস্ট থেকে ঋণ বাড়তে শুরু করে। ফলে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ- এই ৯ মাসে সার্বিকভাবে কৃষিঋণ বিতরণ কমলেও ঋণ আদায় বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে সকল তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক কৃষিঋণ আদায় ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৭ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ২৫ হাজার ৪১০ কোটি টাকা ছিল।

এই সামগ্রিক বৃদ্ধি মূলত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক (পিসিবি) থেকে আদায় ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক (এসওএসবি) থেকে আদায় ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে। বিপরীতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক (এসওসিবি) এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক (এফসিবি) যথাক্রমে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ৫২ দশমিক ০৮ শতাংশ কৃষিঋণ আদায় হ্রাস পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের মার্চ মাসে আদায় ছিল ৩ হাজার ১৯ কোটি টাকা। যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ২ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা। বেড়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মার্চ মাসে আদায় করা হয়েছিল ২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছিল। যেখানে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা জুলাই মাসে। তবে তফসিলি ব্যাংকগুলো অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২৪ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করেছে।

মোট ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১০ হাজার ১৩৩ কোটি টাকারও বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। যেখানে বিদেশি এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো একসঙ্গে ১৪ হাজার ৭২৭ বিলিয়ন টাকা ঋণ প্রদান করেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে সমস্ত তফসিলি ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণ ফসল-কেন্দ্রিক ছিল। ফসল উপ-খাতে মোট ঋণের ৪৭ শতাংশ পেয়েছে। যা অর্থবছরের একই সময়ের ৪৫ শতাংশ থেকে বেশি। প্রাণিসম্পদ ও হাঁস-মুরগির খাতে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে ২৪ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ হয়েছে। যেখানে মৎস্য খাতে জুলাই-মার্চ মাসে ১৪ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিপরীতে, দারিদ্র্য বিমোচন এবং অন্যান্য খাতে বরাদ্দ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে যথাক্রমে ৪ শতাংশ এবং ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। যা অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে ৬ শতাংশ এবং ১১ শতাংশ ছিল।

এই পরিবর্তনগুলো ফসল এবং মৎস্য খাতের ওপর গুরুত্বারোপের প্রমাণ করে। এবং উৎপাদনশীল উপ খাতে সম্পদের পুনর্বণ্টনের ইঙ্গিত দেয়। খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখার জন্য ফসল ও মৎস্য চাষের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে দারিদ্র্য বিমোচন এবং অন্যান্য খাতে সহায়তা তুলনামূলকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে বিতরণ করা হয় ১ হাজার ৭৯১ কোটি, আগস্টে ২ হাজার ৮০ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৮৭ কোটি, অক্টোবরে ২ হাজার ৯৩৩ কোটি, নভেম্বরে ৩ হাজার ৬৯০ কোটি, ডিসেম্বরে ৩ হাজার ১৭৭ কোটি, জানুয়ারিতে ২ হাজার ৯৫৬ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২ হাজার ৯১০ কোটি এবং মার্চে ২ হাজার ৭৩৪ কোটি। 

এদিকে চলতি অর্থবছরের আগস্ট থেকে এ খাতে ঋণ আদায় বাড়তে শুরু করে। এ ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে গত অর্থবছরের জুলাই-মার্চের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কৃষিঋণ আদায় বেড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ আদায় হয়েছিল ২৫ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। জুলাইয়ে ২ হাজার ৫৫৪ কোটি, আগস্টে ২ হাজার ৮৯২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৭৬৪ কোটি, অক্টোবরে ৩ হাজার ১১২ কোটি, নভেম্বরে ৩ হাজার ৭৪৭ কোটি, ডিসেম্বরে ৩ হাজার ৪৭ কোটি, জানুয়ারিতে ২ হাজার ৬৬০ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২ হাজার ৬৪৬ কোটি এবং মার্চে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে।

কৃষি খাতে ঋণ আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বকেয়া ঋণের স্থিতি কমেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চে ব্যাংকগুলোতে বকেয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে স্থিতি ছিল ১০ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। বকেয়া ঋণের স্থিতি কমেছে ৯৭ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ বাড়ায় মোট ঋণের স্থিতি বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চে কৃষিঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে স্থিতি ছিল ৫৬ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা। এর বাইরে কৃষি খাতে নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্স কোম্পানি, বিশেষায়িত ব্যাংক, এনজিও ও সমবায় ব্যাংক ঋণ বিতরণ করছে। তবে এসব খাতে ঋণ বিতরণ বাড়লেও আদায়ের হার কম। এসব খাতের ঋণ আদায় বাড়ানোয় চ্যালেঞ্জিং মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কৃষি উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বল্পমেয়াদি কৃষি পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে (রাকাব) ধারাবাহিকভাবে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

চলতি অর্থবছর সকল তফসিলি ব্যাংকের জন্য কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি।

রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক ৩ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা, রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক ৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ২৪ হাজার ১২১ কোটি টাকা এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১ হাজার ২৬৪ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা