× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমের রপ্তানি বাড়াতে বিমান ভাড়া কমানো হবে: কৃষি উপদেষ্টা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫ ১৫:১৭ পিএম

আমের রপ্তানি বাড়াতে বিমান ভাড়া কমানো হবে: কৃষি উপদেষ্টা

কৃষকদের ধোঁকা না দিয়ে সত্যিকার অর্থে কাজ করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্যাচগোচ না দিয়ে কৃষকদের যেভাবে লাভবান করা যায় সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

বুধবার (২৮মে) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আম রপ্তানির শুভ উদ্বোধনী-২০২৫ এর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবসর), বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম,

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুর রহমান। উন্মুক্ত আলোচনায় চাষিরাও অংশ নেন।

আরিফুর রহমান বলেন, বিশ্বে আম আবাদ হয় ৬৩টি দেশে। তাতে উৎপাদননের পরিমাণ ৭৮.৫৬ বিলিয়ন টন (২০২৩)। আর আমের বৈশ্বিক বাজার প্রায়- ৭১.৯৮ বিলিয়ন ডলার (২০২৫) ও ৯৭.৮২ বিলিয়ন ডলার (২০২৬) ।বাংলাদেশে আমের বাজার ১৩-১৪ হাজার কোটি টাকা। তারমধ্যে বিশ্বে আমের রফতানি বাজার ১.৫১ বিলিয়ন ডলার যার মার্কেট শেয়ার-৪.৬ শতাংশ। ফলনের দিকে সবচেয়ে বেশি হয় ভারতে যার পরিমাণ প্রায় ২৫ মিলিয়ন টন। আর বাংলাদেশে উৎপাদন হয় ২৪-২৫ লাখ মেট্রিক টন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আম রপ্তানি করতে গেলে বিমান ভাড়া অনেক পড়ে যায়। এটি রপ্তানিখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভাড়া কমানোর জন্য বিমান উপদেষ্টাকে ডিও লেটার দেওয়া হবে।

আম উৎপাদনে খরচ কমাতে সহযোগী ফসল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আম চাষের সঙ্গে হলুদ ও আদা চাষ করা দরকার। উৎপাদন খরচ কমাতে এসব ফসল সহায়তা করবে। কেননা আমবাগানের কারণে সূর্যতাপ কম পড়ে। সেখানে এ ধরনের ফসল খুবই উপযোগী। আমাদের আম উৎপান ধানের মতো বাড়াতে হবে।’ 

বিনামূল্য আমের চারা না দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে অল্প টাকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি বলেন, একেবারে বিনামূল্যে দিলে সেগুলোর যত্ন নেওয়া হয় না। তাই হর্টিকালচারগুলো থেকে ৬০ টাকার চারায় ৪০ টাকা প্রণোদনা দিয়ে ২০ টাকা করে কৃষকদের দিতে হবে। একেবারে বিনামূল্যে দেওয়া চলবে না।

এ সময় প্রণোদনার অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে রপ্তানিকারক ও কৃষকদের নানা প্রতিবন্ধকতার কথা শুনে তিনি বলেন, ‘আপনারা কৃষকদের ধোকা দিবেন না। আপনারা লাল আর হলুদ ব্যাগ দিয়ে কোন খরচ কমাতে পেরেছেন? এতে কী উপকার হলো কৃষকের। এগুলো ধোঁকাবাজি কাজ। এসব থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’

এ সময় তিনি আমচাষিদের মন খুলে নির্ভয়ে বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান। আমচাষি মো. সোহেল রানা বলেন, ‘গ্যাপের সার্টিফিকেট পেলে ভালো ও বেশি দামে আম রপ্তানি করতে পারবো। আমাদের ব্যবহার করা ব্যাগগুলো চীন থেকে আমদানি করতে হয়। সেখানে অনেক দাম পড়ে যায়। বাগান থেকে শ্যামপুরের প্যাকেজিং হাউজে ট্রাকে করে আম সরবরাহ করা হয়। এতে প্রচুর আম নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে রাজশাহী, চাপাইনবয়াবগঞ্জে এ ধরনের হাউজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ১ জুলাই থেকে গ্যাপের সার্টিফিকেশন শুরু হবে। 

আদাব ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২০ শতাংশের ইনসেন্টিভ কমে যাওয়ায় ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এসব ইনসেন্টিভ ৬ শতাংশ খেয়ে ফেলে সরকারি লোকেরা সেখানে কৃষক পায় মাত্র ৪ শতাংশ পায়। তিনি রেমিট্যান্স ও রপ্তানিমূল্যের মধ্যকারে বিরাট পার্থক্য রয়েছে তা দূর করতে বলেন। তাছাড়া বিমানবন্দরের আবহাওয়ার জন্য অনেক আম নষ্ট হয়ে যায় বলেও উল্লেখ করেন।

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, কৃষকরা ব্যাংকেই ঢুকতে পারে না। তারা ঋণ পায় না। এ ধরনের সমস্যা দূর করতে হবে।

মো. কাঞ্চন মিয়া নামের ব্যবসায়ী বলেন, আমের মৌসুমে স্কিনার মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। কাজ করা যায় না।

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, সীতাকুণ্ডে বিশেষ একটা মেশিনটা ছিল, সেটাও কাজের সময় নষ্ট থাকে। কেন জানেন? এ সময় তিনি পকেটে টাকা ঢুকানোর দিকে ইঙ্গিত করেন।

ব্যবসায়ী ইসমাঈল খান শামীম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০ কোটি পিস ফুটব্যাগ দরকার। এটাকে কৃষিপণ্য ঘোষণা ও ভ্যাট মওকুফ করতে হবে।

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, চীনের পণ্যকে আমরা কৃষিপণ্য ঘোষণা দিতে পারবো না তবে এটি দেশে উৎপাদনের ব্যবস্থা নেন তাহলে কৃষিপণ্য ঘোষণা দেওয়া যাবে।

ব্যবসায়ী শামীম চাষিদের আম রপ্তানিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে দাবি জানিয়ে বলেন, যারা কারওয়ান বাজার থেকে আম কিনে রপ্তানি করে তা বাতিল করতে হবে।

ব্যবসায়ী মসসুর রহমান বলেন, আমাদের আমের রং নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে। বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে কাজ করলে বিশ্ববাজারে অধিক দাম পাওয়া যাবে।

গ্লোবাল ট্রেড লিংয়ের (জিটিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘চীনে আম রপ্তানির উদ্বোধন বাংলাদেশের কৃষি রপ্তানি খাতে এক নতুন সম্ভাবনাময় অধ্যায়ের ইঙ্গিত দেয়, যা দেশের সমৃদ্ধ উদ্যান ঐতিহ্য এবং আন্তর্জাতিক বাজারে এর ক্রমবর্ধমান পদচিহ্ন প্রদর্শন করে। আজ জিটিএল সাতক্ষীরা থেকে জার্মানিতে ৫৫০ কেজি আম সফলভাবে রপ্তানির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রপ্তানি শুরু হলো। এ বছর আমরা আম রপ্তানিতে পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারব, যা বিশ্ব বাজারে আরও বেশি সুযোগের পথ প্রশস্ত করবে।’

তিনি বলেন, চীনের প্রতিদিন চাহিদা ৫০ টন, সেখানে জিটিএল ১০ টন করে রপ্তানি করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘ইউরোপে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে সকল ধরনের ট্রেসেবিলিটি পূরণ করেই রপ্তানি করা হয়ে থাকে। এ বছর প্রথমবারের মতো চীনে আম রপ্তানি হচ্ছে। অন্যান্য দেশে রপ্তানির দরজা খুলতে হবে।’

মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, আজ যেসব সমস্যা চিহ্নত করা হয়েছে তা সমাধান করতে পারলে এখাতে বিপ্লব ঘটবে। সরকার ২০৫০ সাল পর্যন্ত কৃষিতে ২৫ বছর দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেখানে আমের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, রপ্তানি শুধু স্বাধারণ বিমান দিয়ে হবে না, এজন্য বিশেষ কার্গোর ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান বিশ্বের ৩৮টি দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। সেখানে আরো কীভাবে বাজার তৈরি করা যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও সৃজনাল ফল রপ্তানির ব্যবস্থাও করতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা