× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সরকারের ব‍্যাংকঋণে চাপে বেসরকারি খাত

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ২১:৫৮ পিএম

সরকারের ব‍্যাংকঋণে চাপে বেসরকারি খাত

সরকারের ব্যাংকঋণ বাড়ার কারণে বেসরকারি খাতের জন্য ব্যাংকঋণ কমে আসছে- ফলে শিল্প ও বিনিয়োগ খাতে চাপ তৈরি হয়েছে। 

শনিবার (২৪ মে) প্রকাশিত পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) প্রণীত সামষ্টিক অর্থনৈতিক আউটলুকে এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৯৮৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন টাকা ঋণ নিয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। এই ঋণ প্রবৃদ্ধির হার গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিপরীতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে- ফেব্রুয়ারিতে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং মার্চে বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ১২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার অনেক নিচে।

আউটলুকে বলা হয়েছে, সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির ধারা যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে বেসরকারি খাতের জন্য ব্যাংকঋণ আরও সীমিত হবে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান উৎস বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে।

জিইডির ভাষ্য অনুযায়ী, ‘বর্তমান অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি অর্থায়ন সীমিত হওয়ায় সরকার বাজেট ঘাটতি মেটাতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেই অধিকাংশ ঋণ নিয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে বেসরকারি খাতে।’

প্রতিবেদনে বেসরকারি খাতে অর্থায়ন সংকটকে ‘ক্রাউডিং আউট’ অবস্থার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি খাতের ক্রমবর্ধমান ঋণগ্রহণ ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করছে তাদের তহবিল মূলত সরকারের জন্য সংরক্ষণ করতে, যার ফলে প্রাইভেট সেক্টরের জন্য অর্থপ্রবাহ সংকুচিত হচ্ছে।’

ব্যাংক খাত ও রেমিট্যান্স পরিস্থিতি

জিইডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মার্চ ২০২৫-এ ব্যাংক আমানতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এটি ব্যাংক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিলেও তা ঋণ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট নয় বলে আউটলুকে সতর্ক করা হয়েছে।

একই সময়ের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রিজার্ভ পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাপ এখনও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিচে রয়েছে।

বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্ত

আউটলুকে বলা হয়, ‘টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ, বিশেষত বেসরকারি খাতের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’ এক্ষেত্রে অবকাঠামো খাতে বেসরকারি অংশগ্রহণ এবং উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাজস্ব নীতি ও বাজেট ঘাটতি

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজস্ব আদায়ে কাঠামোগত দুর্বলতা বজায় থাকায় বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার ব্যাংকঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দেওয়া এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগÑ এই দুটি নতুন সত্তা প্রতিষ্ঠাসহ সাম্প্রতিক কাঠামোগত সংস্কারগুলো দেশের রাজস্ব কাঠামোকে উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত টাস্কফোর্সের সুপারিশের ভিত্তিতে ১২ মে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জারি করা এই সংস্কারটি করা হয়েছিল। এর লক্ষ্য হলো এনবিআরের মধ্যে দীর্ঘদিনের অদক্ষতা এবং স্বার্থের দ্বন্দ্ব মোকাবিলা করা এবং প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণকে উৎসাহিত করা।

জিইডির মতে, ‘রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থার সংস্কার এখন সময়ের দাবি। প্রমাণভিত্তিক রাজস্বনীতি প্রণয়ন, এনবিআরের কাঠামোগত পুনর্গঠন এবং ট্যাক্স জিডিপি অনুপাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছাড়া বাজেট ঘাটতি মোকাবিলা সম্ভব নয়।’

অর্থনৈতিক ঝুঁকি ও প্রস্তাবনা

আউটলুকে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিবেশের অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতির চাপ ও বৈদেশিক খাতের ঝুঁকিকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে মুদ্রাস্ফীতি সামান্য হ্রাস পেয়েছে, যার প্রধান কারণ খাদ্যের দাম হ্রাস-বিশেষ করে চাল এবং মাছ। আউটলুক কৌশলগত খাদ্য মজুদ বজায় রাখা এবং স্কুল ফিডিং উদ্যোগ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্প, উন্মুক্ত বাজার বিক্রয় এবং কর্মসংস্থান গ্যারান্টি প্রোগ্রামের মতো কর্মসূচি শক্তিশালী করার সুপারিশ করে। আর্থিক সীমাবদ্ধতা এবং খাদ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যের কারণে এই ব্যবস্থাগুলো অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা