প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ১৮:৪৮ পিএম
সড়ক অবরোধের আর্থিক ক্ষতি তুলে ধরে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের দেশে কোন না কোন বিষয় হলেই রাস্তাঘাট সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধির সঙ্গে অর্থনীতির বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা তা আমলেই নিচ্ছি না। কেননা একদিন যদি রাস্তাঘাট অবরোধ করে রাখা হয় তাহলে একদিনে ৫০ লাখ মানুষের যে পরিমাণ আয় হয় সেই পরিমাণ অর্থ ক্ষতি হয়।’
শনিবার (২৪ মে) সকালে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডিসিসিআইর সভাপতি তাসকীন আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (কাস্টমস) কাজী মোস্তাফিজুর রহমান এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নগদ প্রণোদনার চাইতে কার্যকর নীতি সহায়তাই মূল হিসেবে কাজ করবে। পণ্য বহুমুখীকরণের জন্য নন-ট্রেডিশনাল খাতে জোর দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য নীতিমালার সংস্কার, কমপ্লায়েন্স ও স্ট্যান্ডার্ড এবং বেসরকারিখাতের প্রস্তুতি- তিনটি বিষয় নিয়ে সরকার কাজ করছে। তৈরি পোশাকখাতে ম্যান মেইড ফাইবার ব্যবহারের জন্য বেসরকারিখাতে এগিয়ে আসতে হবে।’
তিনি মনে করেন, ‘যথাযথ অবকাঠামো, জ্বালানি নিরাপত্তা, আর্থিক ও নীতি সহায়তা এবং লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করতে পারলে আগামী ২-৩ বছরে তৈরি পোশাক খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘নির্বাচনের বাইরে দেশে আর্থিক ও বাণিজ্যিক রোড ম্যাপ নেই। রাজনীতির ঊর্ধে উঠে ব্যবসায়ীদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার কাঠামোগত সংস্কার জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে যে গতিতে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। শিল্পখাতসহ অন্যান্য সেক্টরে আমাদের কোনো দীর্ঘমেয়াদে রোডম্যাপ নেই, যা হাতাশার বিষয়।’
তাই সংস্কারের পাশাপাশি সরকারের সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, বন্দর অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। তাই এগুলোর ব্যবস্থাপনা সচল রেখে নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করা অপরিহার্য।
ব্যবসায়ী সমাজের দাবিগুলো যৌক্তিক আকারে সরকারের নিকট উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতই আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণ করতেই হবে, এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের উচ্চমানের তৈরি পোশাক পণ্য, ওষুধ এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের ওপর বেশি মনোযোগী হতে হবে।’
তিনি জানান, এলডিসি পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে সবার অংশগ্রহণে অতি দ্রুত একটি জাতীয় ডায়লাগ আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মানবম্পদ, শিল্প-কারখানা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির জন্য পারস্পরিক আস্থা-বিশ্বাস বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’