× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গমের কমলেও দাম বাড়ছে প্যাকেটজাত আটা-ময়দার

হুমায়ুন মাসুদ

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৫ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গম থেকে আটা-ময়দা উৎপাদন করা হয়। সেই হিসেবে বাজারে গমের দাম কমলে আটা-ময়দার দামও কমে। আবার গমের দাম বাড়লে বেড়ে যায় আটা-ময়দার দাম। খোলা আটা-ময়দার ক্ষেত্রে এটি সমন্বয় হলেও প্যাকেটজাত আটা-ময়দার ক্ষেত্রে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। বাজারে গমের দাম কমলেও প্যাকেটজাত আটা-ময়দার দাম কমে না। উল্টো ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলছে। আগস্ট মাসে ৫৫ টাকায় বিক্রি করা প্যাকেটজাত আটা এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। 

আগস্টের তুলনায় আট টাকা বেড়ে অক্টোবর মাসে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হয়েছিল ৬২ টাকায়। এরপর তিন টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অথচ এই চার মাসে কয়েক দফায় গমের দাম কমেছে, আবার বেড়েছে। গমের দাম কমলেও এসময় প্যাকেটজাত আটার দাম সমন্বয় করা হয়নি। খোলা আটার দাম গমের দামের সঙ্গে কয়েকবার সমন্বয় করা হয়েছে। এখন বাজারে গমের দাম কমতে থাকায় খোলা আটা-ময়দার দামও কমতির দিকে। তবে প্যাকেটজাত আটার দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী।

এ বিষয়ে সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘গমের দামের সঙ্গে প্যাকেটজাত আটার দাম সমন্বয় করা হয়। তবে কম দামে কেনা গম এখনও বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়নি। তাই প্যাকেটজাত আটার দাম কমানো সম্ভব হয়নি। রাশিয়া থেকে খুব বেশি গম আসেনি। নতুন দামে আমদানি করা গম দেশে আসলে প্যাকেটজাত আটার দাম কমে যাবে।’ 

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ছয় মাসে অন্তত ১৫ থেকে ২০ দফায় পাইকারিতে গমের দাম উঠানামা করেছে। গত নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্বশেষ খাতুনগঞ্জে গমের দাম বাড়ে। তিন দিনের ব্যবধানে গত ৩ নভেম্বর প্রতি মণে (৩৭ দশমিক ৩৩ কেজি) গমের দাম বাড়ে অন্তত ৪০০ টাকা। এদিন পাইকারি বাজারটিতে প্রতি মণ রাশিয়া, ইউক্রেন ও কানাডার গম বিক্রি হয় দুই হাজার ৪০ টাকায়। অথচ এর তিন দিন আগে ১ নভেম্বর একই গম খাতুনগঞ্জে বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৬৪০ টাকায়। 

এরপর গত এক মাসে গমের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ কানাডিয়ান গম বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮৫০ থেকে এক হাজার ৯৩০ টাকায়। তবে ডিও-তে (ডিমান্ড অর্ডার) গমের দাম আরেকটু কম। খাতুনগঞ্জে প্রতিমণ গমের ডিও বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫৫০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায়। 

গত এক মাসের ব্যবধানে পাইকারিতে গমের দাম মণ প্রতি ২০০-২৫০ টাকা কমলেও প্যাকেটজাত আটা, ময়দার ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। গত এক মাস ধরে বেড়ে যাওয়া দামেই প্যাকেটজাত আটা-ময়দা বিক্রি হচ্ছে। 

মুদি দোকানিরা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে প্যাকেটজাত আটা ময়দার দাম কমেনি। এই ছয় মাসে কয়েক দফায় দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৮২ টাকায়। 

এ বিষয়ে নগরীর চৌমুহনী কর্ণফুলী মার্কেটের নুরে মদিনা স্টোরের বিক্রয় প্রতিনিধি বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘গত তিন মাসে প্যাকেটজাত আটার দাম কখনও কমেনি। উল্টো কয়েক দফায় কেজি প্রতি আটার দাম বেড়েছে অন্তত ২০ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে প্যাকেটজাত প্রতি কেজি আটা বিক্রি করেছি ৫৫ টাকায়। এখন প্রতি কেজি বিক্রি করছি ৭০ টাকায়।’

এদিকে প্যাকেটজাত আটা-ময়দার দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও পাইকারিতে গমের দাম কয়েক দফায় উঠা-নামা করার পর এখন ধারাবাহিকভাবে কমছে।

এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের তৈয়বিয়া ট্রেডার্সের মালিক সোলায়মান আলম বাদশা বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে এখন সব ধরনের পণ্যের দাম কমতির দিকে। এরপরও বেচাকেনা খুব একটা নেই। বাজারে এখন গম, ডাল, তেল সবকিছুর দাম কমছে। ডিও-তে প্রতি মণ গম বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫৫০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায়।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম এখন কমছে। তবে সেই সুযোগটা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা নিতে পারছেন না। ব্যাংকগুলো এলসি নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এখন বড় দুই-তিনটি শিল্প গ্রুপ ছাড়া কেউ গম আমদানি করতে পারছেন না। সব ব্যবসায়ী এলসি খোলার সুযোগ পেলে গম আমদানি অনেক বাড়ত। তখন বাজারে গমের দাম আরও কমে যেত।’

বাজারে খোলা আটার দামও মাঝে মাঝে উঠা-নামা করে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) দাম কমেছে অন্তত ১০০ টাকা। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে বেচাকেনা কমে যাওয়ায় আটার দামও কমছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বস্তা প্রতি আটার দাম কমেছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। 

এম বি ট্রেডার্সের মালিক কাঞ্চন ঘোষ বলেন, ‘আজকে প্রতি বস্তা আটা বিক্রি করছি দুই হাজার ৭০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই আটা বিক্রি করেছি দুই হাজার ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।’

গমের দাম কম বেশি হওয়ার কারণে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোলা আটার দাম উঠা-নামা করলেও এর সঙ্গে সমন্বয় করে প্যাকেটজাত আটার দাম কমেনি। উল্টো গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবেই দাম বেড়েছে। আগস্ট মাসের তুলনায় আট টাকা বেড়ে অক্টোবর মাসে বিক্রি হয়েছিল ৬২ টাকায়। এরপর তিন টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়। তারপর এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। 

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্য তালিকা ঘেটেও দেখা গেছে একই চিত্র। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ধারাবাহিকভাবে আটার দাম বাড়লেও মাঝে মাঝে আটার দাম কমেছে। তবে প্যাকেটজাত আটার ক্ষেত্রে সেটি করা সমন্বয় হয়নি। গত তিন মাসে প্যাকেটজাত আটার দাম ধারাবাহিকভাবেই বেড়েছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এই বছর ডিসেম্বর মাসে কেজি প্রতি খোলা আটার দাম বেড়েছে ২৮ টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুতে প্রতি কেজি আটার দাম ছিল ৩২ টাকা। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) টিসিবির মূল্য তালিকায় ওই আটার দাম ৬০ টাকা। ১০ দিন আগে ২৬ নভেম্বর প্রতি কেজি আটা বিক্রি হয়েছিল ৫৮ টাকায়। এর আগে গত ৬ নভেম্বরও প্রতি কেজি খোলা আটা ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। ওই সময় ৫ দিন ৫৮ টাকা দরে বিক্রির পর ১১ নভেম্বর দুই টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আটা বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। তবে প্যাকেটজাত আটার ক্ষেত্রে সেটি সমন্বয় করা হয়নি। গমের দাম কমলেও প্যাকেটজাত আটার দাম কমেনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা