× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাজারের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ কারিগরি শিক্ষা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২২:০০ পিএম

আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২২:০১ পিএম

বাজারের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ কারিগরি শিক্ষা

দেশের কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা শ্রমবাজারে প্রবেশের পরও কাজ পাচ্ছে না বা দীর্ঘদিন বেকার থাকছে। এর মূল কারণ হিসেবে পরিকল্পনার ঘাটতি, যুগোপযোগী পাঠ্যক্রমের অভাব, আধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের দুর্বলতা চিহ্নিত করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা : বর্তমান পরিস্থিতি ও সংস্কার চিন্তা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে নানা কর্মসূচি ও উদ্যোগ থাকলেও তা বাস্তবতার সঙ্গে সংযুক্ত নয়। আমরা যে ধরনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, শ্রমবাজারে তার আর প্রয়োজন নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জনের পরও অচল থেকে যাচ্ছে।’

সিপিডি জানায়, এসডিজির লক্ষ্য অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার কথা থাকলেও বাংলাদেশ সে পথে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। বর্তমানে দেশে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, তা অনেকটাই পুরোনো। ফলে শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত হতে পারছে না।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘শুধু প্রশিক্ষণ নয়, কারিগরি শিক্ষার সার্বিক কাঠামোতেই সংস্কার প্রয়োজন। আমাদের শিক্ষকমণ্ডলী অনেক ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন, আবার অনেক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষকও পাচ্ছে না। পাঠ্যক্রম পুরোনো, যন্ত্রপাতি অচল। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে জাতীয় পর্যায়ের একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা জরুরি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে একটি নেতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও কাজ করছে। পরিবার ও সমাজ এখনও কারিগরি শিক্ষাকে ছোট করে দেখে। বিবিএ বা সাধারণ শিক্ষা নেওয়া ছেলেদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় অথচ কারিগরি পেশাজীবীরা দেশে ও বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এই মানসিকতা না বদলালে শ্রমবাজারে দক্ষতার ঘাটতি থেকেই যাবে।’

সিপিডির মতে, পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় কারিগরি শিক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারেও এই খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। দেবপ্রিয় বলেন, ‘শুধু শিক্ষা খাতে মোট জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিলেই হবে না। কারিগরি শিক্ষার বৃত্তি, যন্ত্রপাতি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়নÑ সবকিছুর জন্য নির্দিষ্ট করে বাজেট থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামছে। কিন্তু তাদের দাবিগুলো রাজনৈতিক অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। মিডিয়ায়ও যথাযথ কভারেজ নেই। এই উদাসীনতা পুরো ব্যবস্থারই প্রতিফলন।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কারিগরি শিক্ষায় সংস্কার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় দিয়ে নয়, শিল্প, শ্রম, প্রবাসী কল্যাণ, পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি টেকসই নীতি কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।

দেবপ্রিয় বলেন, ‘শিক্ষা কমিশন গঠনের কথা বহু বছর ধরে বলা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। অথচ এটি শুধু কারিগরি নয়, সামগ্রিক শিক্ষার রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারত। রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেই এমন একটি কাঠামো বাস্তবায়িত হচ্ছে না।’

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে শিক্ষার চেয়ে ডিগ্রির প্রতি গুরুত্ব বেশি। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবমুখী ও কর্মসংস্থানবান্ধব শিক্ষা দিতে না পারলে ভবিষ্যতে কর্মহীন যুবশক্তিই বড় সংকট তৈরি করবে।

সিপিডি প্রস্তাব করেছে, জাতীয় পর্যায়ে একটি ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হোক, যেখানে নীতিনির্ধারক, শিক্ষা ও শিল্প খাতের প্রতিনিধি এবং গবেষকরা একসঙ্গে কাজ করবেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের মান যাচাই ও বাজারের সঙ্গে সংযোগ তৈরিতে একটি স্বাধীন নিরীক্ষা ব্যবস্থাও গড়ে তোলার আহ্বান জানায় সংস্থাটি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা