প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২১:১৮ পিএম
ঢাকায় চার দিনের সম্মেলনে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। সামিটে এসেই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে দিবেন বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।’
চার দিনের ওই সম্মেলনের আয়োজন করে বিডা। সংবাদ সম্মেলনে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই সম্মেলনের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে। সরকারি খরচ হয়েছে দেড় কোটি টাকা। তবে খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। চারদিনের সামিটে এসে কেউ ১০০ কোটি টাকার চেক লিখে ফেলবে, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। সামিটের খরচ দিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ বিচার করলে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ফ্যাক্টরি ভিজিট করিয়েছি। ফ্যাক্টরি করতে হলে কোথায় যেতে হবে, তাদের দেখানো হয়েছে। সম্মেলনে এসে বিনিয়োগকারীরা খুব খুশি হয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য খাবারের ম্যানু থেকে আমরা যেন আগেই বাদ না পড়ে যাই। আমরা একইসঙ্গে সংস্কারের কাজ করব, আর বিনিয়োগের পাইপলাইন বিল্ডিং এর কাজ করে রাখব।’
বিডার চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ১০ এ ১০ পাওয়ার মতো সামিট হয়নি। যতো সফলতা আছে তা সবার। ব্যর্থতা বিডা ও বেজার। প্রতিবছর এ ধরনের সামিট হতে পারে। এ ধরনের সিমিলার ইভেন্ট পরবর্তীতে বা পরবর্তী সরকার করবে বলে প্রত্যাশা করি।’
তিনি আরও জানান, বিনিয়গের পাইপলাইন ঠিক রাখতে বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা সবাইকে থ্যাংক ইউ মেইল পাঠানো হবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে।
বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, ‘উদ্বোধনী সামিটে ৭৫০ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪১৫ জন বিদেশি ছিল। পুরো সম্মেলনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয়। স্পিকার ও প্যানেলিস্ট ছিল ১৩০ জন। বিটুবি আকারে দেড়টি অফিসিয়াল মিটিং হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, হান্ডা ও শপআপের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এছাড়া সম্মেলনে ৬টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আমরা কিছু উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। যেমন বিদেশ থেকে কেউ যদি তার নিজস্ব সোর্স ব্যবহার করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসে তাহলে তাকে প্রনোদনা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে। যেমনটি রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে দেয়া হচ্ছে।’
১০ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল
দেশের ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা বাতিল করেছে বিডা। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বাতিল তালিকায় ৫টি সরকারি এবং ৫টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল আছে।
বাতিল করা সরকারিগুলো হলো, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক (কক্সবাজার), সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক (বাগেরহাট), গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল (মুন্সীগঞ্জ), শ্রীপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল (গাজীপুর) এবং ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ময়মনসিংহ)।
বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হলো, বিজিএমইএ গার্মেন্টস শিল্প পার্ক (মুন্সীগঞ্জ), ছাতক ইকোনমিক জোন (সুনামগঞ্জ), ফমকম ইকোনমিক জোন (বাগেরহাট), সিটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন (ঢাকা) এবং সোনারগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল (নারায়ণগঞ্জ)।